‘সেভেন ইয়ারস ইন টিবেট’ ছবিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তার পরবর্তী বছরগুলিতে তিব্বতের সামাজিক অবস্থা এবং চিনের আগ্রাসনের এক জীবন্ত দলিল। পর্বতারোহী হাইন্রিখ হারা তাঁর আত্মজীবনী মূলক উপন্যাস - যার থেকে এই চলচ্চিত্রটি বানানো, তাতে তিব্বতে কাটানো সাত বছরের এবং অধুনা দালাই লামার সাথে তাঁর পরিচয়ের বিবরণ রেখে গেছেন। তার কিছু বছর পরেই এক বঙ্গসন্তান সম্পূর্ণ পায়ে হেঁটে সিকিম থেকে যাত্রা শুরু করে তিব্বতের লাসা এবং মানসসরোবর হয়ে অধুনা উত্তরাখণ্ডে প্রবেশ করেন। ভু-পর্যটক বিমল দে তাঁর এই অসামান্য যাত্রার কাহিনী লিখেছেন ‘মহাতীর্থের শেষ যাত্রী’ বইটিতে।
তিব্বতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তখন যথেষ্ট টালমাটাল। চিন উত্তর দিক থেকে তিব্বতের বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ চালিয়ে ক্রমশ দক্ষিণে এগিয়ে আসছে। লেখক বিমল দের বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। বাড়ি থেকে পালিয়ে বোধগয়া হয়ে তিনি কোনওরকমে পৌঁছান সিকিমে। সেখানে দেখা হয়ে যায় এক তিব্বতি সাধুর সাথে যিনি তাঁকে দীক্ষিত করেন ও নিজের দলে টেনে নেন। মূলত তাঁর সাথেই বিমল দে পারি দেন লাসার দিকে। ভারতীয় হিসাবে তাঁর পরিচিতি যাতে ধরা না পরে যায় তাই তিনি মৌনী সাধুর বেশ ধারণ করেন। তার ফলে তিব্বতি গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর খাতিরও বেড়ে যায় - কেউ প্রণামি দিতে চান তো কেউ আশীর্বাদ নিতে। এভাবে চলতে চলতে দলটি লাসা পৌঁছে যায়। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য তাঁদের পত্রপাঠ ভারতে ফেরত যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। বাকি দলটি ফিরে গেলেও বিমল দে একা পারি দেন কৈলাস - মানসসরবরের দিকে। দিনের পর দিন চলতে থাকে তাঁর যাত্রা। গ্রামের পর গ্রাম পেরিয়ে যায়। অবশেষে তিনি তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছান। শেষবারের মতো ভারত-তিব্বত সীমান্ত বন্ধ হওয়ার আগে তিনি কৈলাস মানসসরোবর ভ্রমণ করে ফিরে আসেন ভারতে।
এ এক অভিনব যাত্রা, এক অভিনব কাহিনী। তিব্বতের সংস্কৃতি আর দালাই লামার জন্ম ও দালাই লামা চয়ন ঘিরে অনেক গল্প আছে এই উপাখ্যানে। কাহিনীর সবচেয়ে অভিনব দিক হল কিছু মানুষ - যারা সঠিক সময়ে এসে লেখককে সাহায্য করেছেন এগিয়ে যেতে, যেন কালচক্র তাঁদের এক স্থানে এক সময়ে এনে ফেলেছে।
এই ওয়েবসাইটের কার্যকারিতার জন্য আমরা কুকি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সঙ্ক্রান্ত তথ্যের জন্য আমরা কুকির সাহায্য নিই। নিচের বটন ক্লিকের মাধ্যমে আপনি সমস্ত রকমের কুকি ব্যবহারে সম্মতি জানাচ্ছেন।