মুক্তোর মালার মত পংতির মালা - মীরাতুন নাহার

মুক্তোর মালার মত পংতির মালা - মীরাতুন নাহার

বই নিয়ে আলোচনা

মুক্তোর মালার মত পংতির মালা 

-- মীরাতুন নাহার 

মুক্তোর মালার মতো পংতির মালা গেঁথেছিলেন মীনাকুমারী। মালাকার হয়ে ছিলেন তিনি। তাঁর অভিনেত্রী সত্তার সক্ষমতা সকলের জানা-চেনা। কিন্তু পংতির মালাকার কবি হিসাবে তাঁর পরিচয় আজও অচেনা-অজানা। এই কবিকে চিনে নেব আমরা তাঁর লেখা কিছু কবিতার মাধ্যমে। স্বল্প পরিসরে সেই পরিচয়টুকু সেরে নেওয়া যাক্ - ১. পংতির মালা, ২. কবিতায় ঝিলিক দেওয়া তাঁর জীবন দর্শন। 


১.পংতির মালা

একেকটি কবিতা থেকে বেছে নেওয়া মুক্তোর মত শব্দ সমষ্টি যা পাঠক মনকে দোলা দেয়, নাড়া দেয় আর চমকে দেয় অচেনা শুরে মন ভিজিয়ে -


মনের মাটিতে খুঁজেছি সোঁদা সোঁদা সুগন্ধ 

=======

ভেঙে খান খান হওয়া হৃদয়কে 

কেন আমি তুলে রাখব না!

=======

এক একটা মুহূর্ত যেন 

বৃষ্টির জলবিন্দু !

=======

এ আমার কেমন ব্যাথা, যা

ঝনঝন ঝনঝন করে ভেঙে যায় !

=======

শুভ্রতার প্রতিটি মুহূর্ত দ্বিধায় উঁকি মারছে। 

=======

এই দুঃখ ছাড়া আমার নিজস্ব বলে কিছু নেই 

=======

ঝরে পড়া বৃষ্টিকে বল মেঘের সঙ্গে টক্কর না দিতে। 

=======

একি তোমার চোখের পলক , নাকি আমার !

=======

প্রেমের অপরাধে কি সাজা হয়েছে আমার,

সে-প্রশ্ন না করাই ভালো। 

=======

আর আমার মুহূর্তরা তোমার নামের বাঁধনে বাঁধা।

 =======

তোমার সব ব্যথার উচ্চারণ,

আমার অস্ফুট যন্ত্রণার গাঁথা।

 =======

এ হলো মৃত্যুর অমানিশা। জন্মেরও। 

=======

শিরায় শিরায় বুনে দিচ্ছে বিদ্যুৎ প্রবাহ 

=======

আর আমার হারানো জীবনের সুবাস 

স্মৃতির পাত্রকে করে তুলছে পূর্ণ। 

=======

কী যে ভাল হয়েছে, রাত্রি এসেছে!

=======

মৃত্যু যেন বারবার আমারি নাম ধরে ডাকে!

=======

জীবন, ব্যাথার জেলখানায় বন্দী ছিল না। 

=======

এই আকন্ঠ তৃষ্ণায় যদি কেউ বিষ ঢেলে দেয়,

তবেই তৃপ্ত হবে আমার তৃষ্ণা। 

=======

সব রাতই মায়াবী।

_______


২. জীবন-দর্শনের দু’চার ঝিলিক  


— জীবন যেন এক ছড়িয়ে পড়া ব্যথা 

     দুঃখ কথায় টানছে যবনিকা। 


— প্রতিটা খুশিই হলো এক বিধ্বস্ত বেদনা। 

    আবার প্রতিটা দুঃখই বিভৎস আনন্দ। 

    সব অন্ধকারই আসলে এক ম্লান আলো। 

    সব আলোই আবার এক অবসৃত অন্ধকার। 

   প্রতিটা বর্তমানই এক নিহিত অতীত। 

   আর প্রতিটা অতীত এক মৃত বর্তমান। 

   ==================


—যুগ তো অতীত 

    যুগই আবার ভবিষ্যৎ। 

    বর্তমান দৃষ্টিভ্রম ছাড়া আর কিছুই না। 

    =================

    

— কেউ কোনদিন বর্তমানকে দেখেনি 

    কেউ কোনদিন বর্তমানকে সেভাবে 

    পরখ করেনি। 

    আর ভবিষ্যৎ এতটাই দূরে

    যে, কোন হাতই পৌঁছতে পারেনি ততদূর। 


অজস্র উর্দু শায়েরী লিখেছেন মীনাকুমারী, যাঁর আসল নাম ছিল মাহজাবীন বানো (১৯৩৩ - ১৯৭২),

সেগুলি থেকে ৫৬টি কবিতা নিয়ে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে এই ভাষার পাঠকদের উপহার দিয়েছেন সৃজনশীলতায় মূলত কবি সুধাংশুরঞ্জন সাহা কবিতাপ্রেমিক মহলকে তিনি তৃপ্তি দিতে পারবেন সুমধুর - স্থির বিশ্বাসে বলা যায়। অনবদ্য অনুবাদ। মূল কবিতা, না জানি, আরও কত হৃদয় ছোঁয়া !

https://boierhaat.com/product/MinaKumarirKobita

Boier Haat™   |   © All rights reserved 2024.