কিছু কিছু বই আছে, যা শেষ করার পর আমি কে, কোথায় আছি তা বুঝতে ক্ষাণিক সময় লাগে, আর সেটুকু সময় অতিক্রান্ত হলেই মনে হয়, এ কি পড়লাম!
সন্মাত্রানন্দের 'নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা' পড়ার পর এমনই এক অনুভূতির সম্মুখীন হয়েছি।
পন্ডিত অতীশ দীপঙ্করের জীবনকে আশ্রয় করে এই উপন্যাসটি রচিত। বইটি পড়তে পড়তে মনের মধ্যে একটার পর একটা দরজা খুলতে থাকে। তিনটি সময়কালকে নিয়ে লেখক এই উপন্যাসকে সাজিয়েছেন, সেখানে গল্প এক যুগ থেকে আরেক যুগে অবাধে বিচরণ করে। আসলে লেখক সময়কে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যতে বাঁধেননি। তিনি মনে করেছেন এই তিন কাল একই সঙ্গে ঘটে চলেছে। গল্পের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন সময়ের চরিত্ররাও কি অদ্ভুত ভাবে মুখোমুখি হয়। গল্প যত এগিয়েছে কিছু নাম তাদের উজ্জ্বল আলোকে ততই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কুন্তলা, স্বয়ংবিধা, জাহ্নবী। চিরন্তন নারীসত্তা তার প্রেম, ব্যাথা, বাৎসল্য নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে ফিরে এসেছে এই পৃথিবীর বুকে।
উপন্যাসের বিস্তৃতি, সময়ের সঙ্গে পাল্টাতে থাকা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, গভীর বৌদ্ধ দর্শন, কখনো কখনো গল্পকে জটিল তোলে। টান টান ভাব যেন হঠাৎ থমকে যায়। এই সময়ে মনে হতেই পারে, কটা পাতা টপকে যাই! তবে ধৈর্য্য আর মনোযোগের অভাব না থাকলে প্রতিটা পাতার প্রতিটা লাইন পড়তে হয়। ধীরে ধীরে জাগ্রত হয় উপলব্ধি, বেরিয়ে আসে উপন্যাসের প্রকৃত নির্যাস। আর শেষ পাতা ওল্টানোর পর বন্ধ বইখানা হাতে ধরে মনে হয়, আহা! এ কি পড়লাম!
এই ওয়েবসাইটের কার্যকারিতার জন্য আমরা কুকি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সঙ্ক্রান্ত তথ্যের জন্য আমরা কুকির সাহায্য নিই। নিচের বটন ক্লিকের মাধ্যমে আপনি সমস্ত রকমের কুকি ব্যবহারে সম্মতি জানাচ্ছেন।