অনুবাদ-সাহিত্যের সূচনা কবে কোথায় হয়েছিল জানা নেই কিন্তু অনুবাদ-সাহিত্য যে বিশ্বায়নের অনেক আগেই বিশ্বায়ন করেছিল তাতে আর সন্দেহ নেই।তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত বিশ্বের জানালার অর্গল খুলে দেয়া, যাতে শতপুষ্পের খোলা হাওয়া সাহিত্যের উঠোনে নির্বিবাদে চলাচল করতে পারে। এই অপূর্ব যোগাযোগের ক্ষেত্রটি সেতুর কাজ করেছিল। শুধুমাত্র যে সাহিত্য পাঠ করে চোখ বন্ধ করে হজম করা তা বোধহয় অনুবাদ সাহিত্য নয় । অন্য একটি দেশ বা পাশের রাজ্যের সংস্কৃতি, মনন, চিন্তনের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, অচেনাকে চিনে নেওয়ার যোগসূত্রের হিসেবে অনুবাদ সাহিত্য কাজ করে চলেছে । অনুবাদ সাহিত্য না থাকলে সত্যি কি আমরা চিনতে পারতাম ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকার মানুষের ভাবনাকে। ম্যাজিক রিয়েলিজমের অপুর্ব জগত থেকে যেত ধরা ছোঁয়ার বাইরে মার্কেসের লেখা না পড়লে। ইংরেজিটা কিছু সংখ্যক মানুষের জানা থাকলেও স্প্যানিশ ও ফ্রেঞ্চ তেমন জানা ছিল না আপামর জনগনের। তাই ভরসা অনুবাদ সাহিত্য। শুধু কি বিশ্ব - আমরা পাশের রাজ্যের সাহিত্যকে তেমনভাবে চিনি, জানি! পাশের রাজ্যের মনের কথা, সেখানকার মানুষের রাজনীতি, ভাব, অনুভুতি, তার লোক-চরিত, লোককথা জানতে তো অনুবাদের হাত ধরেই চলতে হবে। বাংলা আসাম ও উড়িষ্যা তিন ভাষাতুত বোন। আমরা সত্যি কি আসাম উড়িষ্যার মানুষ ও সমাজের কথা তেমন ভাবে জানি ! এই না জানাই অনেক সমস্যা তৈরি করে। দূরত্ব তৈরি করে। দূরকে কাছে আনতে হলে মানুষে মানুষে ভুল বোঝাবুঝি বিভেদ দূর করতে হলে দূর দেশ পাশের রাজ্য সক্কলকে অরো বেশি বেশি করে পড়তে হবে জানতে হবে কাছে টানতে হবে। তাই অনুবাদ সাহিত্যকে অবজ্ঞা নয় আর বেশি বেশি করে পড়ুন। এটা কোন প্রান্তিক সাহিত্য নয় মূল-ধারার সাহিত্য ভেবে আর আপন করে নিতে হবে অনুবাদ সাহিত্যকে।
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.