আন্টার্কটিকা
সুদীপ্তা সেনগুপ্ত
আন্টার্কটিকা। পৃথিবীর তলায় লুকিয়ে-থাকা শেষ আবিষ্কৃত মহাদেশ। তুষারঝড়ের বাসভূমি, পৃথিবীর শীতলতম, শুষ্কতম, উচ্চতম এবং দুর্গমতম মহাদেশ। প্রাচীন গ্রীকরা যে-কল্পিত দক্ষিণদেশের নাম দিয়েছিল আন্টার্কটোকিস অর্থাৎ সপ্তর্ষিমণ্ডলের বিপরীতে, সেই কল্পিত দেশই একদিন মানুষের পদার্পণে হয়ে উঠল বাস্তব। আন্টার্কটিকা। দীর্ঘকাল-অজ্ঞাত সেই মহাদেশ, যার রহস্যময় হাতছানিতে বারবার অভিযাত্রীরা হয়েছেন ঘরছাড়া। কেউ-বা বছরের পর বছর ধরে খুঁজে বেরিয়েছেন বরফ-জমা সমুদ্রের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত, কেউ বরণ করেছেন গ্রীক ট্র্যাজেডিপ্রতিম বীরের মৃত্যু। কেউ গিয়েছেন পাল-তোলা জাহাজে, কেউ ভেসে বেরিয়েছেন বরফের টুকরোর ভেলায়। আন্টার্কটিকা। চিরতুষারে ঢাকা সেই রহস্যময় মহাদেশ, যেখানে প্রায় দেড়শো বছর আগে মানুষ প্রথম পা রেখেছিল। আর সেই থেকে আজও সমানে চলেছে যেখানে রহস্যময় অবগুণ্ঠন উন্মোচনের নিরন্তর প্রয়াস। বিশ্বের নানান উন্নত দেশ আজ আন্টার্কটিকায় স্থাপন করেছে গবেষণা-কেন্দ্র। ভারতও তার অন্যতম। ভারতীয় গবেষণাকেন্দ্রটির নাম-দক্ষিণ গঙ্গোত্রী। আন্টার্কটিকার তৃতীয় ভারতীয় অভিযানে স্থান পেয়েছিলেন প্রথম বাঙালী মহিলা বিজ্ঞানী সুদীপ্তা সেনগুপ্ত। আন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্না ভূতত্ত্ববিদ্। এই গ্রন্থে সেই অভিযানেরই বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার গল্প শুনিয়েছেন তিনি। রুদ্ধশ্বাস কৌতূহল নিয়ে শুনতে হয় এই কাহিনী। সুদীপ্তা সেনগুপ্তের এই গ্রন্থ শুধু তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার নিখুঁত রোজনামচা ভাবলে ভুল হবে। বস্তুত, আন্টার্কটিকা সম্পর্কে যাবতীয় প্রশ্নেরই উত্তর এই বইতে। শুরু থেকে অদ্যাবধি আন্টার্কটিকাকে ঘিরে যত ধরনের জল্পনাকল্পনা ও অভিযান অভিজ্ঞতা, সমস্ত কিছু শুনিয়েছেন তিনি এই বইতে। তাঁর চোখে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসা, কিন্তু কলমে দুর্লভ সাহিত্যিক দক্ষতা। তাই শব্দ হয়ে উঠেছে চলচ্ছবি। স্বাদু, সজীব, সরস, তথ্যসমৃদ্ধ। এক প্রামাণিক চলচ্ছবি। 'দেশ' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশকালেই আলোড়ন তুলেছিল এই রচনা। গ্রন্থাকারে আদ্যন্ত পরিমার্জিত হয়েছে। সেইসঙ্গে বহু রঙীন ছবি, সাদাকালো ছবি ও চার্ট এ-বইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এর আকর্ষণ বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি