সিনেমাপাড়া দিয়ে (অখন্ড)
তরুণ মজুমদার
"সিনেমাপাড়া দিয়ে ঘুরঘুর করতে করতে কতগুলো বছরই যে কেটে গেল! এর রাজপথ থেকে গলিঘুঁজির ধূলো আমার দু পায়ে মাখা। অবশ্য দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে এ জগতেও বদল ঘটে চলেছে। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। ধরা যাক, যা হয়তো এককালে ছিল পুরনো চণ্ডীমণ্ডপ, উৎখাত হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে গেল ঝাঁ-চকচকে একটা শপিংমল। খোড়ো চালের ঘর-দোর দিয়ে তৈরি আস্ত একটা পাড়াকে গিলে নিল বিশাল মাল্টি-স্টোরিড কমপ্লেক্স। আগেকার চেহারাটাকে ঠাহর করাই মুশকিল।
তাই বলে কি বদল হবে না? স্থবির, অচল, অপরিবর্তনীয় ব্যবস্থা বলে কি কিছু হয়? সামনেই আছে হাতে-গরম কিছু উদাহরণ। যেমন ধরা যাক আগেকার দিনের সিনেমা। নির্বাক দিয়ে শুরু। অনেক পরে এল শব্দ। আদিতে ছিল ব্ল্যাক-অ্যান্ড-হোয়াইট, পরে এল রঙিনের যুগ। আগেকার ছায়াছবির সেলুলয়েডের ফিতেকে হাত দিয়ে ছোঁওয়া যেত, নাড়াচাড়া করা যেত, স্পর্শসুখের ভেতর দিয়ে আপন করে নেওয়া যেত-বিশেষ করে নিজের তৈরি ছবি হলে তো কথাই নেই। এখন সবই 'ডিজিট্যাল', বলতে গেলে বিমূর্ত। ছোঁওয়া-ছুঁয়ি, আদর করার কোনও ব্যাপারই নেই। নদীর এ পারে আমি, তো আমার বানানো ছবির ফ্রেমগুলো সব নদীর ওপারে। মাঝখানে দাঁড়িয়ে আধুনিক টেকনোলজি-দুর্লঙ্ঘ একটা ব্যবধান তৈরি করে দিয়ে মিটিমিটি হাসছে আর বৈষ্ণব গীতি-কবিতার ঢংয়ে গুনগুনিয়ে গাইছে, 'ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না বঁধু, ওইখানে থাকো/মুকুর লইয়া চাঁদমুখখানি দেখো'।" - তরুণ মজুমদার
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.