গয়া-কাহিনী
শ্রীঅতুলচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও শ্রীরমেশচন্দ্র মজুমদার
‘গয়া কাহিনী’ গ্রন্থটির মধ্যে দুটি রচনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রথমটি অতুলচন্দ্র মুখোপাধ্যায় রচিত গ্রন্থ ‘গয়া কাহিনী’ এবং অন্যটি ‘বঙ্গবাণী’তে প্রকাশিত ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদারের সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ ‘গয়া’। রমেশচন্দ্র মজুমদারের প্রবন্ধটিতে মিশে আছে গয়াভ্রমণের অভিজ্ঞতার সঙ্গে ইতিহাস-অনুসন্ধিৎসু মনন। সুখপাঠ্য প্রবন্ধটি সব বয়সি পাঠকের কাছেই একটুকরো খোলা বারান্দার মতো। আর অন্যদিকে অতুলবাবুর গ্রন্থটি আকারে বৃহৎ এবং তথ্যবহুল। পুরাণের কাহিনি থেকে ব্রিটিশ রিপোর্ট – কোনো কিছুই লেখকের চোখে ব্রাত্য হয়নি গয়ার ইতিহাস ও মাহাত্ম্য বর্ণনায়। অতুলবাবু ছিলেন পেশায় উকিল, ইতিহাসবিদ নন। স্বাভাবিক প্রবণতায় তিনি তথ্যে মনোনিবেশ করেছেন বেশি; ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে কিছু খামতি থেকেই গেছে। লেখক সাধারণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আবেগকে প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। বিশেষত, লেখক জাতীয়তাবাদী ভাবধারার দ্বারা কিছুমাত্রায় অনুপ্রাণিত ছিলেন বলেও অনুমিত হয়। তাই পক্ষপাতিত্বও থাকবে তাঁর লেখনীতে, এমনটা স্বাভাবিক। বর্তমান নিরপেক্ষ ইতিহাসচেতনায় সেই খামতি কখনোই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। তবে গ্রন্থটিতে পরিবেশিত তথ্য নিঃসন্দেহে গবেষকদের কাছে রত্নখনিতুল্য। সর্বোপরি, গ্রন্থটি পুনরুদ্ধারের কারণ বিংশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতইতিহাসচর্চার উষাকালে শিক্ষিত বাঙালির নিরলস পরিশ্রমের একটি প্রায়-বিস্মৃত নিদর্শনকে আধুনিক প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। এটি আমাদের পূর্বসূরিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন মাত্র।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি