গল্পের জীবনানন্দ

(0 পর্যালোচনা)
লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন
রুমকি রায় দত্ত

মূল্য
₹300.00
ক্লাব পয়েন্ট: 30
পরিমাণ
মোট দাম
শেয়ার করুন

গল্পের জীবনানন্দ

(জীবনানন্দ ১২৫ গ্রন্থমালা ৩) 

রুমকি রায় দত্ত 

সম্পাদনা : দূর্বাদল দত্ত 

একটি গবেষণাধর্মী সহজপাঠ্য বই, যা জীবনানন্দ সৃষ্ট গল্প পাঠের আগ্রহ জাগিয়ে তুলবে।

-------------

গ্ৰন্থের অংশবিশেষ : 

হয়তো মৃত নক্ষত্রগুলো জীবিত হয়েই উঠছিল। কারণ শচী বারান্দার রেলিং ধরে হারিয়ে যাচ্ছিল পাড়াগাঁর কুয়াশা- ধানের খেত, পালংশাক, বীট, গাজর, জিউলি, হিজল, বেঁটে খেজুরগাছ, শুঁয়োেপাকা, প্রজাপতি, কাঁচপোকা, জোনাকি, সুপুরির কুঁড়ি ঝরা শব্দ, আমের মুকুল ঝরার টুপটাপ শব্দ মেশানো আট দশ বছর আগের পাড়াগাঁর কোনো এক কোণে।

যে নক্ষত্রগুলোকে মৃত মনে হচ্ছে, সেগুলি কি আসলে জীবিত? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হাঁটতে হবে গল্পের পথে পথে। সে পথে হাঁটার আগে বলি, নিস্তব্ধতারও একটা শব্দ থাকে। এই যে রাতের নৈসর্গিক আবেশ... সুপুরির কুঁড়ি ঝরা, আমের মুকুল ঝরার টুপটাপ শব্দ কুয়াশার রাতের নিস্তব্ধতার ভিতর এক স্বপ্নের জগৎ গড়ে তোলা, এ কেবল জীবনানন্দের চেতনাতেই সৃষ্টি হতে পারে। এমন দ্যুলোক কাঁপানো চিত্রকল্প মানুষের মনের নিস্তব্ধতা ভাঙার দায় না-নিয়ে যাবে কোথায়? পাঠক এই ভাবনার মধ্যে দিয়ে শচীকে জীবনানন্দের অভিন্ন আত্মা বলে ভাবলেও, দোষ দেওয়া যায় কি?

'কাসুন্দি' আর 'ভিনিগার' যেন এ গল্পে গ্রাম আর শহরের ব্যঞ্জনা বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভাস্বর হয়ে উঠেছে। শচীর স্বামী প্রকাশ কলকাতা ছাড়া ভারতের বাকি শহর যেমন লক্ষ্ণৌ, আম্বালা, মিরাট, এলাহাবাদ প্রভৃতিকে অনেক উন্নত মনে করে। সে খাবার টেবিলে ভিনিগার চায়। শচী কাসুন্দি শুধু ভালোবাসে তাই নয়, সে বিশ্বাস করে রুকমিনির মতো অবাঙালী মেয়েরা কাসুন্দি বানাতে পারে না। বাংলার গ্রামের মেয়ে সে নিজেই ভালো কাসুন্দি বানানোর যোগ্য। একটুকরো গ্রামবাংলা যেন শচীর ভাবনা আর কাজের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মভাবে এঁকে দেন লেখক।

শচী গভীর রাতে একা একা ডিনার করে। লেখক বলেছেন- "ডিনার টেবিলে একা একা খেতে বসল। অত্যন্ত ধীরে ধীরে চামচ-কাঁটা চালিয়ে অনেক ভেবে ভেবে খাচ্ছে সে। চামচ-কাঁটা রেখে দিচ্ছে। হাত দিয়ে খাওয়ার একটা স্পৃহা প্রায় তাকে পেয়ে বসে।"

হাত দিয়ে খাওয়ার স্পৃহা পেয়ে বসে, তবু সে চামচ-কাঁটা দিয়েই খায়। শচীর জীবনের কোনও এক গোপন দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত যেন খাওয়ার টেবিলের এহেন বর্ণনায় তুলে ধরতে চাইলেন। কী সেই 'দ্বন্দ্ব'? কোথায় ফিরতে চাইছে শচী? চাইছে অথচ পারছে না।

শচীর শুধু হাত দিয়ে খাওয়ার স্পৃহা জাগে না, তার স্বামীর কাছে ষাট টাকার চাকরির উমেদারি করতে আসা সোমেনের মুখের উপর দরজা পিটিয়ে দেবার দুর্দমনীয় স্পৃহাও জাগে। দরজা পিটিয়ে চাবি বন্ধ করে দেওয়ার ইচ্ছা হয়। "চাবি বন্ধ" এই শব্দও যেন শচীর মনের পরাজয়ের চিহ্ন বহন করে। 

----------

পর্যালোচনা ও রেটিং

0 মোট 5.0 -এ
(0 পর্যালোচনা)
এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

সংশ্লিষ্ট বই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি