এপার বাংলায় কেন্দ্র থেকে প্রান্তের দিকে যত যাবেন, রসগোল্লার হালকা রস ক্রমশই তত ঘন শিরায় বদলে যাবে। কিংবা ধরুন, কৃষিতে সমৃদ্ধ হুগলি জেলার মনোহরা আর রুক্ষ রাঢ়-বঁাকুড়ার মেচা—এ দুই মিষ্টি একই গোত্রের হয়েও দুটির উপাদান, স্বাদ ও দামের ফারাক বুঝিয়ে দেবে কেন আধুনিক সমাজতত্ত্ব-চর্চায় খাদ্যকে অচেনা সমাজে প্রবেশের সদর দরজা বলা হচ্ছে, আর কেনই বা মিষ্টি তার বাইরে নয়। পশ্চিমবঙ্গ এমন এক রাজ্য, যেখানে গড়পড়তা প্রতি একশ কিলোমিটারে মানুষের সাংস্কৃতিক অভ্যাস, রীতি, পছন্দের ধঁাচ বদলে যায়। বাংলার মিষ্টান্নশিল্প ও সংস্কৃতিকে ঠিকঠাকভাবে বুঝতে তাই মিষ্টি নিয়ে অতিকথার বদলে ইতিহাসের ভিয়েনে আঞ্চলিক স্মৃতি ও তথ্যের একটা সুস্বাদু পাক খুব দরকারি ছিল। বর্তমান বইটি বাংলায় প্রথম মিষ্টান্নচর্চার জেলা-অভিযাত্রাকে সংকলিত করল, মিষ্টির রস ও স্বাদে হানি না ঘটিয়েই।