আমার কানন

সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪১ সালের ৯ মার্চ মধ্য হাওড়ার রামকৃষ্ণপুরের খুরুট ষষ্ঠীতলায়। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর সাহিত্য সাধনার শুরু। ১৯৬১ সাল থেকে আনন্দবাজার পত্রিকা সহ একাধিক বহুল প্রচারিত কাগজে ধারাবাহিকভাবে লেখালিখি করলেও, শুকতারায় প্রকাশিত 'পাণ্ডব গোয়েন্দা' ১৯৮১ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার পর পাঠক সমাজে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা পান। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও 'পাণ্ডব গোয়েন্দা'-র নাম শোনেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে।

শুধু কিশোর সাহিতাই নয় বড়দের লেখালিখির ক্ষেত্রেও বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখনীতে। রাজস্থানের প্রবাদপ্রতিম কবি চন্দ বরদাই-এর নামাঙ্কিত পুরস্কার, শৈলজানন্দ পুরস্কার, ভারতচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার, শরৎ স্মৃতি পুরস্কার সহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমী প্রদত্ত 'বাল সাহিত্য পুরস্কার'।

'আমার কানন' মূলত এক জীবনের দোলাচলে ঘূর্ণায়মান প্রেমের ট্রাজেডি। তবে এ প্রেম আর পাঁচটা সাধারণ প্রেমের উপন্যাসের মতো নয়। পাঠককে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কাহিনীবিন্যাস এই উপন্যাসের, আবার একটা অদ্ভুত ভ্রমনের রেশও আছে উপন্যাসের ছত্রেছত্রে। ছোটবেলার খেলার সঙ্গী এক মেয়ে, যাকে বাল্যকালে হারিয়ে ফেলে গল্পের নায়ক। তার সঙ্গে দেখা হয় বিহারে। ট্রেনের কামরায়। মধ্যরাতে। ততদিনে দুজনেই যৌবনে পা রেখেছে। মেয়েটি বিবাহিত। ট্রেন দাঁড়ালো বিহারের দুটো শুনশান স্টেশনের মাঝে। একটু অপ্রস্তুত লাগলেও দুজনেই চিনে নিল বাল্যপ্রেমকে। ট্রেন থেকে দুজনে নেমে গেল দুটি স্টেশনের মাঝে ফাঁকা মাঠে। কেন সংসার পরিজন ছেড়ে মেয়েটি নেমে পড়লো ট্রেন থেকে, সেই অর্থে পরপুরুষের হাত ধরে? ছেলেটিই বা অন্যের বিবাহিত স্ত্রীর হাত ধরে কেন প্রতিজ্ঞা করলো সারাজীবন একসঙ্গে থাকার? এই সম্পর্ক কি আদৌ পরিনতি পাবে? এক অদ্ভুত ট্রাজেডির আলোয় উদ্ভাসিত উপন্যাসের চরিত্রগুলো। এ উপন্যাস পাঠক একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে ছাড়তে পারবে না।