' বাঙালি জীবনে কৃত্তিবাসী রামায়ণের গুরুত্ব বাড়িয়ে বলার উপায় নেই। তার প্রথম মুদ্রিত সংস্করণটি প্রকাশিত হয় শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে, ঊনবিংশ শতকের একেবারে
আদিলগ্নে। পয়ার ছন্দে লেখা সেই কাব্য অতি স্বাদু চলতি গদ্যে পুনর্লিখন করেছেন প্রবীর সেন।
.... অতি চেনা কাব্যকে গদ্যের ভাষায় ধারণ করার কঠিন কাজটি সাবলীল ভাবে করে আগামী দিনের পাঠকের ধন্যবাদার্হ হলেন লেখক।
---- আনন্দবাজার পত্রিকা
২৮.০১.২০২৩
' গদ্যে কৃত্তিবাসী রামায়ণ '
গত কয়েক বছর ধ'রেই প্রবীর সেন আঁকাআঁকি,ছোটদের লেখা সব মুলতুবি রেখে পড়ে-লিখে চলেছেন রামায়ণ-মহাভারত।এর আগে তাঁর কলম থেকে বেরিয়েছিল বিপুলায়তন বই 'মহাভারতের উপাখ্যান সংগ্রহ'।উপকাহিনী ধ'রে ধ'রে বিনির্মিত পথে মহাভারত পড়া।সে বই নিয়ে আগেই লিখেছি।সে বই কিনে কতজন যে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন কী বলব!
এবার একই প্রকাশক 'পাতাবাহার' প্রকাশ করেছে 'গদ্যে কৃত্তিবাসী রামায়ণ'।এবার অতটা বিনির্মাণের ঢংয়ে নয়,বরং সোজাসাপটা গদ্যে গোটা বর্ণনাটা উপস্থাপিত করা।বিস্তারটাকে না ভেঙে।ছোট ছোট
বাক্যে।মাঝারি পরিচ্ছেদে।প্রয়োজনমতো পয়ারের দ্বিপদিগুলোকে উদ্ধৃত ক'রে।
এখনকার না-প্রৌঢ় পাঠকেরা রস পাবেন।সরলতা পাবেন।
ভূমিকাতেই নব্য কথক নিজের পক্ষপাত পরিষ্কার করেছেন হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের স্বাক্ষ্যকে গ্রহণ ক'রে যে,"কৃত্তিবাসের পরেও অনেক কবি দেশীয় ভাষায় রামায়ণ রচনা করিয়াছেন,কিন্তু উত্তর ভারতের খ্যাতনামা কবি তুলসীদাস ভিন্ন কৃত্তিবাসের মত আর কেহ আচন্ডাল নরনারীর এমন প্রীতি আকর্ষণ করতে পারেন নাই।"
প্রবীর সেন মনে করিয়ে দিয়েছেন শুরুতেই কৃত্তিবাসের রামায়ণ মুদ্রিত অবস্থায় পাওয়া শুরু ২২০বছর আগে।এবং তা শ্রীরামপুরের খ্রিস্টিয় যাজকদের সৌজন্যে।এসব তথ্যের কান্ডজ্ঞান নিজেদের দৈনন্দিনের সঙ্গে জুড়ে নিলে কত কাজে যে লাগে...!
প্রবীর সেন মহাশয়কে মহাকাব্যের উদ্যান-অলিন্দ নীরোগ ও উদ্যমি রাখুক।শুভকামনা।সঙ্গে অপেক্ষা ।
---- সৌমিত্র বন্দোপাধ্যায়