গদ্য-সংগ্রহ ২
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
ভূমিকা :
মৌলিক সৃষ্টির অবকাশে প্রায়শ অনুরুদ্ধ হতে হয় নানা ধরনের ফরমায়েসি গদ্য লেখায়। গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখতে লিখতে হঠাৎ সম্পাদেকের তাগিদে লেখা হয়ে যায় কখনও একটি সিরিয়াস প্রবন্ধ, কখনও কোনও বিষয়ভিত্তিক গদ্যরচনা, কখনও আত্মজৈবনিক স্মৃতি-আলেখ্য, কখনও হালকা ফিচার, কখনও ডায়েরির আকারে কিছু অভিজ্ঞতা, কখনও কোনও বই নিয়ে আলোচনা, কখনও কোনও খ্যাতিমান কবি-লেখকদের সঙ্গে আলাপচারিতার আলেখ্য।
দীর্ঘ চল্লিশ বছরেরও বেশি গদ্যলিখনের পর্বে এমন কত লেখাই যে লিখতে হয়েছে তার সংখ্যার সীমা-পরিসীমা নেই। আমার সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটেছে উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থে, কিছু কবিতার বইতেও, কিন্তু গদ্যেও তো ব্যক্ত হয় কিছু একান্ত ভাবনা। অথচ কোনও কারণে গদ্যরচনাগুলি রয়ে গেছে 'কাব্যে উপেক্ষিতা'র মতো বারান্দার এক কোণে, তাকে জায়গা দেওয়া হয়নি ঘরের নিরাপদ আশ্রয়ে। হয়তো এ ধরনের লেখায় কখনও ধারাবাহিকতা থাকে না বলেই!
বেশ কিছুকাল ধরে ভাবছিলাম দুই মলাটের মধ্যে তাদের ধরে রাখা যায় কি না। যখন কলমে লিখতাম, সেই পাণ্ডুলিপির অধিকাংশই সংরক্ষিত করা যায়নি। লেখাগুলি মুদ্রিত হয়েছিল পত্রপত্রিকায়, কিন্তু পত্রিকার পাতা ছিঁড়তে মায়া হত বলে থেকে গিয়েছিল পত্রিকার মধ্যে, সেই পত্রিকাগুলিও ঠিকমতো সংরক্ষিত হয়নি, ফলে একসময় মিশে গেছে আমার কয়েক হাজার বইপত্রের ভিড়ে। এখন খুঁজতে গেলে ডুবুরি নামতে হত, কিন্তু কোথায় সেই ডুবুরি।
দু হাজার সালের পর থেকে লেখা শুরু করেছি কমপিউটারে, সেই দিনগুলিতে হার্ডডিস্কের পাতায় রেখে ভেবেছি, এবারই হল ঠিকঠাক সংরক্ষণ, এই লেখাগুলি বোধ হয় টিকে থাকবে, তার মধ্যে বার দুই হার্ড ডিস্ক বসে যাওয়ায় আবার বিপত্তি। কিছু উদ্ধার করা গেছে, বেশিটাই যায়নি। যাকে বলে আমার চূড়ান্ত অগৃহিণীপনা। অবশেষে গত ছ মাসের চেষ্টায় কমপিউটারের কয়েকশো ফাইলের ভিতর থেকে বেছেবুছে কিছু লেখা দেওয়া গেল দু' খণ্ড গদ্যসংগ্রহের মধ্যে।... তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি