হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর 

উত্তমকুমার চট্টোপাধ্যায় 

এক কলমপেষা কেরানির হৃদয়ে রূপোলি পর্দায় 'স্টার' হয়ে ওঠার মালমশলা কীভাবে ও কতখানি জমে থাকতে পারে এবং কোন পথ অতিক্রম করে তা বাস্তবে রূপায়িত হয়, তার ঝকঝকে ছবি ফুটে উঠেছে, এই স্মৃতিকথায়। এই বইতে, বাঙালির হৃদয়ে চিরহরিৎ বৃক্ষের মতো চিরজীবন্ত 'উত্তমকুমার' -এর আপন কলমই বলে উঠেছে, তাঁর নিজ লক্ষ্যপথে পৌঁছানোর সেই পথ খুঁজে পাওয়ার কাহিনি। একে আমরা হয়তো বলব 'লড়াই' কিন্তু 'উত্তমকুমার' হওয়ার জন্যেই যাঁরা জন্মান, তাঁদের কাছে এ যেন এক স্বতস্ফূর্ত জীবনভ্রমণ। পরিবার থেকে অভিনয় জগৎ সর্বত্রই যে রোম্যান্টিক সাবলীলতা, যা তাঁর চরিত্র থেকে সবসময়ই ঠিকরে বেরিয়েছে এই বইয়ের মধ্যে সেই খোলামেলা প্রকাশের এতটুকু হেরফের ঘটাননি স্বপ্নের নায়ক। এককথায়, এই আংশিক আত্মজীবনকথা উত্তমকুমারকে 'স্টার' হিসেবে আরেক নতুন অর্থে যেন আমাদের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত করে। 

লেখক পরিচিতি : 

উত্তমকুমার জন্ম ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। ভালো নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। স্কুলে থাকতেই অভিনয় করেন মুকুট ও গয়াসুর নাটকে। কমার্সে স্নাতক হয়ে পোট কমিশনার্সে চাকরিতে যোগদান। ১৯৪৭ এ হিন্দি মায়াডোর ছবিতে প্রথম অভিনয় করলেও, তা মুক্তি পায়নি। এর মাঝে সঙ্গীত তালিম নেন শ্রদ্ধেয় সঙ্গীতজ্ঞ নিদানবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে। ১৯৪৮-এর দৃষ্টিদান-এ ছবির জগতে প্রবেশ করে বসু পরিবার (১৯৫২) ছবিতে প্রতিষ্ঠা পেয়ে, অগ্নিপরীক্ষা (১৯৫৮) য় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন উত্তম। ১৯৫৩ থেকে টানা প্রায় ৫০০ রাত্রি স্টারে শ্যামলী নাটকে মঞ্চাভিনয় করেন। এরপর কয়েকদশক জুড়ে রূপোলি পর্দা শাসন করে হয়ে ওঠেন এক ও অদ্বিতীয় স্টার। হিন্দি ছবিতে অভিনয় ছাড়াও, দুটি বাংলা ছবির সঙ্গীত পরিচালনাও করেছিলেন উত্তমকুমার। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই, আকস্মিক প্রয়াণ ঘটে, এই অবিসংবাদিত নায়কের। মৃত্যুর ৩৩ বছর পরে আজও প্রজন্মের পর প্রজন্ম উত্তমকুমারকে স্টার হিসেবে হৃদয়ে ধরে রেখেছে।