শ্রেষ্ঠ কবিতা
রাহুল পুরকায়স্থ
শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকা :
অগত্যা লিখতেই হবে। কিন্তু তেমন কীই-বা আছে আমার জীবনযাপনে, যা গদ্যে লেখা যায়!
লেখালেখি, যে-কোনো লেখালেখিই হায়, আজও আমার কাছে সন্দেহজনক, ঠিক যেরূপে সন্দেহজনক তুমি। এই তোমাকে নিয়েই আমার যাবতীয় বিপত্তি, ইহজীবনের। তোমাকে আর দেখে ওঠা হল না, সম্যক উপলব্ধিও করা গেল কি?
সেই বালকবেলা থেকেই এক আশ্চর্য কলোনিকে আমি যেন নাছোড় টেনে নিয়ে চলেছি-হলুদ নদীর এক দেশ, চাঁদ ভাসে পাহাড়চূড়ায়। কলোনির চাঁদ, উদ্বাস্তু কলোনির। তার অকৃত্রিম ও আদি ছায়ার নীচেই আমাদের এজমালি টিউবয়েল ও উনুনের একাধিপত্য। আমার সমস্ত লেখালেখিকেই আমি ওই একাধিপত্যের বাতিকগ্রস্ত জল ও ধোঁয়ার সংক্রমণ বলেই মনে করি, তোমাকেও।
এই সংক্রমণের একটি বিশেষ অলৌকিকতা রয়েছে-ভিটে খোয়ানো, তাড়া খাওয়া, ভাগ্যসন্ধানী জীবনের অলৌকিকতা, যার চরিত্র যুগপৎ সাহসী ও বিষণ্ণ। যার আক্রমণ ও প্রতিহিংসার রণকৌশলই কলোনির কল্পউপাদান, তোমারও। কিন্তু কী বিস্ময়! আমি তো তোমাকে নিয়েই লিখতে চাইছি, আর লিখতে গেলেই চারপাশে ভিড় করে আসছে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত, বাড়িতে ঢুকে ভোজালি দিয়ে স্বামী ও স্ত্রীকে আঘাত, পাপেট উৎসব, গল্পমেলা, ক্রিকেটে ভারতের পরাজয়, ফায়ার, হিন্দু পরিষদ, প্রাথমিকে ইংরেজি, ইমপিচমেন্ট, মজার খেলা কবিতায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা, সি.পি.এম-এর শুদ্ধিকরণ, অমর্ত্য-জ্যোতির্ময়ী, জনযুদ্ধ ও বিপন্ন স্যালামান্ডার...
এতসব ভিড়ের মাঝখান থেকে, এক পুরাতন কলোনির অন্ধকার গলিজীবনের ভিতর থেকে বিপন্ন আমিও দেখতে, স্পর্শ করতে চাইছি তোমাকে
তুমি আমার প্লাবন, আমার ত্রাণশিবিরের রূপকথা
--রাহুল পুরকায়স্থ
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি