দেশভাগ ও সুন্দরবন
স্মৃতিপটে ইতিকথা
স্বপনকুমার মণ্ডল
প্রচ্ছদ : দেবাশীষ সাহা
দেশভাগের স্মৃতি এবং তথ্যমূলক লেখা নিয়ে দুই মলাটের অন্তরে অনেক চর্চা হয়েছে। কিন্তু সম্ভবত সেই চর্চায় বাদ পড়ে গেছে এ বঙ্গের আবাদি সুন্দরবনের কথা। আজ যে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষ সেখানে বাস করেন, বাস্তবিক তার অর্ধেক পূর্ববঙ্গ থেকে আগত। কিন্তু তাঁদের কথা লেখাজোকা নেই তেমন কোথাও। সমাজের নিচুতলার কৃষিজীবী এবং ভূমিজীবী মানুষ যে। মূল স্রোতের সাহিত্য-ইতিহাসে তাঁদের কথা উঠে আসার সুযোগ কম। তাছাড়া দেশভাগের পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৈধ কোনও পদ্ধতি মেনে এঁদের এ বঙ্গে আগমন ঘটেনি। ফলে সরকারি হিসেবে ধরে ফেলাও সম্ভব ছিল না। কিন্তু বাস্তব সত্যি হল, ১৯৪৭-১৯৫২, ১৯৬৪-৬৫, ১৯৭০-৭২ প্রতি ক্ষেত্রেই খুলনা-সাতক্ষীরার কৃষিজীবী মানুষ এখানে আশ্রয় গড়েছেন। সেই আশ্রয় গড়ার গল্প বিচিত্র। বেদনাদায়কও বটে। হাসনাবাদ-বসিরহাট কিংবা কালিন্দী-ইছামতীর এপার-ওপার-কত স্মৃতি ছাই হল সেই গল্প বইতে বইতে।
মানুষের চোখের জলে কালিন্দীর বুকে জোয়ার ফুরাতো না সেদিন। নদী সে সব জানে। রায়মঙ্গল, কলাগাছি, ডাঁসা, কোরানখালি, গুয়াসোবা, মাতলা- সব স্রোতেই সেই গল্প ঘূর্ণি পাক খায়। খুলনা-সাতক্ষীরার চাষাভূষোদের চোখের জল আর নোনা রক্তের ঘূর্ণি-আধভাঙা জীবনের শতচ্ছিন্ন গল্প।
দেশভাগের বলি, তাপিত মানুষের সেই সব সত্যি গল্প নিয়ে এই গ্রন্থ। জনা পঞ্চাশেক ছিন্নমূল মানুষের জীবনের কথা। লিখেছি নিজের ভাষায়। গল্পের মতো ঢঙে। না, ইতিহাস লিখতে চাইনি। সে পরিচয় দূরে সরিয়ে রেখেছি এবার। পাঠকের কাছে সহজ সরল ভাষায় পৌঁছাতে চেয়েছি। প্রকাশ করছে, সোপান। প্রচ্ছদ এঁকেছেন দেবাশিস সাহা। শ' দুয়েক পাতার বই। আশা করি পাঠকের ভাল লাগবে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি