অন্ধকার ডট কম
কৃষ্ণেন্দু বন্দোপাধ্যায়
বইয়ের কথা:
ঠিক সন্ধে সাতটা বাজতেই একটা ভ্রমরের গুঞ্জনের মতো শব্দ শুনতে পেল হীরু। নিমেষে তার চোখ চলে গেল তাকে রাখা বাক্সটার দিকে। আর সঙ্গে সঙ্গে তার বুকটা যেন ছ্যাঁৎ করে উঠল। আজ আবার সেই দিন, অমাবস্যা। একটু পরেই আবার শুরু হবে সেই ভয়ংকর খেলা…. প্রথমদিকে দু-একটা রাত সুদীপ ভেবেছিল এটা একটা দুঃস্বপ্ন, তাই গায়ের জোরে উঠে বসতে চেয়েছিল বিছানায়। কিন্তু পারেনি। সেই অলৌকিক শক্তির কাছে পরাজয় মানতে বাধ্য হয়েছে সুদীপ। আর সেই অবসরে কোনও এক অলৌকিক শক্তির অলংঘ্য নির্দেশে তার সারা গায়ে কেউ যেন ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে বাঁধছে… গাড়িটা স্টার্ট দিল, আর সেই মুহূর্তে মৃণাল গাড়ির পেছনের কাচ দিয়ে দেখলেন, বৌমার হাতটা গিয়ে ছেলেটির গলা জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে আনছে, আর বিনিময়ে ছেলেটা বৌমার পিঠে হাত দিয়ে তার মুখটা নামিয়ে আনছে বৌমার দিকে। এক মুহূর্তের দৃশ্য, পরক্ষণেই গাড়িটা শাঁ করে বেরিয়ে গেল আশ্রমের গেটের দিকে। শেষ বিকেলের পড়ন্ত রোদ সামনের বাগানের ফুলগাছগুলোর ওপর আলোর মায়া সৃষ্টি করেছে। মৃণাল পাথরের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন আর ভাবছিলেন, তিনি নিজে তাহলে কোন আলো রেখে গেলেন তাঁর এতখানি জীবনে? সে আলোয় কি এতটুকু আলোকিত হয়নি তাঁর চারপাশ? শুধু অন্ধকারের মানুষ?… এইরকমই সাতটি গল্প আর একটি নভেলায় সাজানো এই বই, যার পাতায় পাতায় রয়েছে জমাট অন্ধকারের কথা। আতঙ্কের অন্ধকার, অলৌকিকের অন্ধকার অথবা এই গলিত সমাজের অন্ধকার।
লেখক পরিচিতি:
জন্ম ১৯৬৪ সাল। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পেশার বাইরে তাঁর নেশা হল সাহিত্য, শিল্প আর সংস্কৃতি। তাই একদিকে যেমন বিভিন্ন নামীদামী পত্রপত্রিকায় আর ওয়েবজিনে গল্প, উপন্যাস বা কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে তিনি প্রথিতযশা সাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, ঠিক তেমনই তার পাশাপাশি নাটক, নৃত্যনাটা ও শ্রুতিনাটক রচনা এবং মঞ্চায়নের মাধ্যমে বিকশিত তাঁর প্রতিভা। লেখেন ছোটবড় সকলের জন্যই। আর সে লেখা বিভিন্ন ধারায় বিকশিত। তাই কিশোরদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার, কল্পবিজ্ঞান, অলৌকিক বা রূপকথার পাশাপাশি জীবন থেকে উঠে আসা রূঢ় বাস্তবও অনায়াসে চিত্রিত হয়ে যায় তাঁর সাবলীল কলমে। উঠে আসে জীবনের অন্ধকার দিক আর তার বাসিন্দারা। আর সেই সঙ্গে ঝলসে ওঠে জীবনের মানবিক রূপ। কৃষ্ণেন্দুর এ যাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৫। তার মধ্যে ‘আরশিনগর’, ‘ভূতের বৃন্দাবন’, ‘দুর্দান্ত দশ’, ‘পাতায় পাতায় ভয়’, ‘গুহা গোখরো গুপ্তধন’ প্রভৃতি গ্রন্থগুলি ইতোমধ্যেই সুধী পাঠকসমাজের কাছে সমাদৃত। সেইসঙ্গে অসংখ্য ছোটবড়ো সংকলনে মুদ্রিত হয়েছে তাঁর লেখা। তাঁর রচিত ও সুরারোপিত বহু নাটক ও নৃত্যনাট্য বিভিন্ন মঞ্চে সফলভাবে মঞ্চস্থ হয়েছে। অপেরা-নাটক “আলাদিন” বেশ কয়েকবার মঞ্চস্থ হওয়া ছাড়াও হাওড়ার একটি নাট্য কর্মশালায় ব্যবহৃত হয়েছে। একসময় সম্পাদনা করেছেন সাহিত্য পত্রিকা “আলো অন্ধকার”। পেয়েছেন কয়েকটি পুরস্কার, যার মধ্যে “কিশোর ভারতী সাহিত্য পুরস্কার”, “সংশপ্তক পুরস্কার”, “টেগোর ভিলেজ সাহিত্য সম্মাননা” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.