বনফুলের তিনটি উপন্যাস
ভীমপলশ্রী ।। নিরঞ্জনা ।। পীতাম্বরের পুনর্জন্ম
সুজন প্রকাশনী
প্রচ্ছদ : প্রণবেশ মাইতি
প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, যে কাহিনীটি বিবৃত করতে উদ্যত হয়েছি তার স্থানকাল পাত্রপাত্রী সমস্তই কাল্পনিক। ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক কোনও রকম ফাঁদে পা দেবার ইচ্ছে নেই। স্থান অবশ্য আমাদেরই দেশ, কালও বর্তমান-হোটেল, মোটর, ফোন, রেডিও, রেলগাড়ি, সবই আছে-পাত্রপাত্রীও বাঙালী। তরুণ-তরুণী, সেকেলে, দুই-কালের-সীমারেখায়-দণ্ডায়মান সব রকম ব্যক্তিই আছেন।
সুশোভন গল্পের নায়ক। সার্থকনামা বাক্তি। কোথাও কখনও অশোভন হয় নি। কান্তি অনিন্দ্য, ব্যাঙ্ক-ব্যালান্সও অনিন্দ্য। ভবিষ্যৎও নিন্দনীয় নয়। কারণ বাপ মা ভাই বোন প্রভৃতি কোনও রকম ঝামেলা নেই। মাত্র কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় স-সম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে; একটি সুনির্বাচিত সুহৃদ- গোষ্ঠী আছে। চাকরি কিংবা ব্যবসা করে অর্থোপার্জন করবার প্রয়োজন হয় না। এ অবস্থায় সুতরাং যা অনিবার্য তাই তিনি হয়েছিলেন-'কমরেড'। সুদের টাকা উপভোগ করতে করতে ক্যাপিট্যালিজমের নিন্দে করে তিনি অবসর এবং চিত্ত বিনোদন করতেন। কমরেড্ বান্ধবীও জুটেছিল কয়েকটি। বিয়ের সামাজিক বাজার মন্দা আজকাল। বুদ্ধিমতী বাঙালী মেয়েরা রাজনৈতিক বাজারে ভীড় করেছেন। সুতরাং তর্ক, গান, গল্প-গুজব, থিয়েটার, সিনেমা, সাহিত্য, দেশোদ্ধার প্রভৃতি নিয়ে সুশোভনের দিন ভালই কাটছিল। এমন সময় হঠাৎ-ঠিক হঠাৎ না-কমরেড্ অনীতার সঙ্গে আলাপ অনেক দিন আগেই হয়েছিল-তবে অভিনব অনুভূতিটা হঠাৎ উথলে উঠল একদিন এবং শেষ পর্যন্ত সামলানো গেল না। বিয়েই করতে হল। অনীতার মা শ্রীযুক্তা স্বয়ম্প্রভা সরকারের ঘোর আপত্তি ছিল বিয়েতে। কিন্তু উভয়েই যখন কমরেড্ তখন আটকাল না কিছু।...