ছ-দশক আগের স্মৃতির কলকাতা
সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
যুদ্ধের কথা- ব্ল্যাক আউট, সাইরেন, পথেঘাটে গোরা সোলজারদের মাতলামি, কাপড়-কয়লার কন্ট্রোল- এসব গল্পও আমরা অনেক শুনেছি। শুধু শোনা নয়, সেই ভয়ানক সময়টার প্রত্যক্ষ কিছু চিহ্নও ছড়ানো ছিল আমাদের চারপাশে। বাজারে পান বিক্রি করতেন একজন বেঁটেমতো লোক, হাঁটতেন খুঁড়িয়ে। গল্প শুনেছিলাম, সেই খিদিরপুরে যেদিন বোমা পড়ে, তার একটা টুকরো নাকি সেদিন বিঁধে গিয়েছিল লোকটির পায়ে। বেহালায় আমাদের মামার বাড়ি হুকুম-দখল করেছিল মিলিটারি। যুদ্ধ শেষে তাদের ফেলে-যাওয়া মস্ত ট্যাঙ্ক আমরা উঠোনে দেখেছি।
আমাদের শৈশবে ট্রাম-বাস পোড়ানো, বোমাবাজি, গোলাগুলি, খাদ্য-বিক্ষোভ- এসব তো লেগেই থাকত। আর কিছু একটা ঘটলেই গল্পের ভাণ্ডারী আমার পিতা যুদ্ধ-দাঙ্গা নিয়ে গল্প শুরু করে দিতেন। সেসব গল্প তো তখনও বেশ তাজাই ছিল। স্বাধীনতার সময়কার কয়লা-সংকটের গল্পটা এখন কেবল আমার মেজদিই বলে। শীতের দিনে ভোররাতে উঠে লাইন দিতে হতো। বহুবার শুনেছি। আবার শুনতে হয়। কী করব! স্বাধীনতার তেরঙা পতাকাটা তো মেজদির চোখে কয়লায় কালো হয়ে আছে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি