ছবির রাজা ওবিন ঠাকুর
অলোকেন্দ্রনাথ ঠাকুর
সুবচনীর খোঁড়া হাঁসের পিঠে চড়ে আকাশ পথে যেতে যেতে বুড়ো আংলা ‘রিদয়’ জানতে পেরেছিল ওবিন ঠাকুরের কথা, যে ছবি লেখে। সেই ওবিন ঠাকুরের কথা তাঁর আপন ছেলে অলোকেন্দ্রনাথ দুই মলাটের মধ্যে সাজিয়ে তুলেছেন এই বইতে। লেখকের প্রধান উদ্দেশ্য সেই সব ছোটোদের কাছে তাদের প্রিয় অবুদাদুর জীবনের ছবি ফুটিয়ে তোলা, যারা নিজের চোখে দেখেনি এই শিশুবৎসল শিল্পীকে। অপত্যস্নেহে সদামগ্ন এই অবনীন্দ্রনাথ আমাদের কাছে হয়ত খুব পরিচিত নন, যাঁকে ভাষার স্বচ্ছ সুপাঠ্য অবয়বে প্রকাশ করেছেন লেখক। নিজের প্রিয় বাবামশায়ের কথা বলতে গিয়ে, ১৮৯৬ সালে ভূমিষ্ঠ অলোকেন্দ্র শতাধিক বর্ষপূর্বের জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অন্তরের ইতিহাসকেও উজ্জ্বল করে তুলেছেন। সেখানে ‘হরদম তাজা গড়গড়া’ আর পান মুখে অবনীন্দ্রনাথ কতই না বিচিত্র কর্মে নিজেকে ছড়িয়ে দেন। তিনতলার পাথরের ঘরে মেঝেতে বসে সেজের বাতিতে তাঁর মুখে রামায়ণ মহাভারতের গল্প শুনতে শুনতে বড় হয় বাড়ির শিশুরা। এলাহাবাদের প্রবাস যাপনে রচিত হয় ‘রাজকাহিনী’র মালা— অবনীন্দ্রনাথ সবাইকে পড়ে শোনান। রবীন্দ্রনাথের পক্ষ থেকে ফ্রান্স যাত্রার পরামর্শ এলে বলে বসেন— হুগো বালজাক পড়া হয়েছে যখন, তখন বাড়ি বসেই প্যারিসের ছবি এঁকে দিতে পারি।
বাঙালীর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সম্ভবত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পর্বের এক প্রধান কুশীলবকে কেন্দ্র করে প্রত্যক্ষদর্শীর এই স্মৃতিচারণ একাধারে আমাদের মনকে, ফেলে আসা ঐশ্বর্যময় যুগের আকর্ষণে ব্যাকুল করে তোলে আবার একই সঙ্গে ভাবতে শেখায় উত্তরাধিকারের দায়বোধ বিষয়েও।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি