ঘরের মানুষ গগনেন্দ্রনাথ
দ্বারকানাথ চট্টোপাধ্যায়
সেদিনটা ছিল ১৩৪৪ সালের ২রা ফাল্গুন ইং ১৯৩৮ ১৪ই ফেব্রুয়ারী, সোমবার মাঘী পূর্ণিমার রাত্রি ১১-৩০মিঃ জ্যোৎস্নালোকে প্রকৃতি দেবী সেজেছেন নতুন সাজে, মনে হচ্ছে যেন এই মহাপ্রাণ শিল্পী ও ভাবীকালের শিল্পকলার পথপ্রদর্শকের শেষ যাত্রার পথ আলোকিত করাই উদ্দেশ্য। অবনীন্দ্রনাথ ছোট ছেলের মত কাঁদতে কাঁদতে বল্লেন “ওরে আজ ত্রিধারার একটা ধারা শুকিয়ে গেল।” সমরেন্দ্রনাথ সারা জীবন নীরবে ছিলেন, এ ব্যথাও নীরবেই বুক পেতে নিলেন।
বহুদিন পরে তাঁর একটি চিঠি পেলুম তাতে তিনি লিখছেন—
‘দাদা চলে গেলেন। তাঁর প্রতিদিনের যন্ত্রণার অবসান হোল। কী কষ্টে এই আট-ন' বছর কেটেছিল তাঁর তোমরা তা দেখেছ। কিন্তু একদিনের জন্যেও তাঁর মুখে কষ্টের চিহ্ন কেউ দেখেনি। সদা প্রফুল্ল মুখ তাঁর যেন পদ্মের মত ফুটে থাকত মনের দুঃখের পঙ্কের উপর।...
আজ দাদাকে হারিয়ে সব শূন্য মনে হচ্ছে, দাদা বলতে এ-বাড়ীতে ও-বাড়ীতে আমার আর কেউ রইল না। আজন্মের বন্ধন ছিন্ন হোল বটে তবু তাঁর প্রতিভার প্রকাশ রয়ে গেল। তিনি দিয়ে গেলেন অনেক কিছু আমাদের সকলকে। তিনি সেই রকম লোক ছিলেন যে এখানে এসে আলো জ্বালায়।’
রবীন্দ্রনাথ গগনেন্দ্র স্মরণে লিখলেন—
রেখার রঙের তীর হতে তীরে
ফিরেছিল তব মন
রূপের গভীরে হয়েছিল নিমগন।
গেল চলি তব জীবনের তরী
রেখার সীমার পার,
অরূপ ছবির রহস্যমাঝে
অমল শুভ্রতার।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি