শাগাল
গৌতম সেনগুপ্ত
ধ্যানবিন্দু শিল্পকলা গ্রন্থমালা ২
শাগালকে রঙের জাদুকর, সুরিয়ালিজমের অগ্রপথিক, রং-তুলির কবি ইত্যাদি নানাকিছু বলা হয়। বলা হয় আধুনিক চিত্রকলার ত্রিদেব হলেন মাতিস, পিকাসো ও শাগাল। এই বইতে জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি শাগালের শিল্প আর জীবনের নানা রঙের সুতোকে কথকতার মায়াবী ঢঙে বুনেছেন লেখক। যেন ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজব করছেন। সেই গল্পের সূত্রগুলো ধরে ধরে চলা ছবি থেকে অন্য ছবিতে। ইতিহাসযানে ভেসে সময়ের উজানে রাশিয়ার গ্রাম মফস্বলে। ইহুদিদের ‘পেল অফ সেটুলমেন্ট’, জারের শাসন, সেন্ট পিটাসবুর্গ, ঘনায়মান বিপ্লবের ধূম, বলশেভিক রাশিয়া। আভাঁ-গার্দ পারি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, বিপ্লবোত্তর রাশিয়া, ইহুদি বিদ্বেষ, হিটলার আর তার ইহুদিনীতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। চোরাপথে স্পেন হয়ে আমেরিকা পলায়ন ইহুদি শাগালের। এক দীর্ঘ পরিব্রাজন যা শেষ জীবনে এসে থামে পারি-তে। অথচ মন পড়ে রইলো সারাজীবন শৈশবের কৈশোরের স্মৃতিমাখা মফস্বলে। স্মৃতি সময়ের সম্মুখগতিকে বারম্বার লঙ্ঘন করে, কথকতাও তাই। শাগালের ছবি যেন চুঁয়ে আসা স্মৃতির নির্যাস, আর তার থেকেই যেন ফুটে উঠেছে এই বইয়ের কথকতার ছাঁদ। ভালোবাসা ছাড়া যার আর কোনো রং নেই।
৯৮ বছরের জীবনে মার্ক শাগাল (১৮৮৭-১৯৮৫)আমৃত্যু ছবি এঁকেছেন প্রায় সব মিডিয়ামে। রং-তুলি হাত থেকে নামতো না। গুলে খেয়েছিলেন প্রিন্ট মেকিং। রঙিন লিথোগ্রাফে এনেছিলেন স্বর্গীয় বিভা। বিপ্লবের বর্ষপূর্তিতে আঁকেন শহরজোড়া কাটআউট, হোর্ডিং। অলঙ্করণ করেন বাইবেল, ক্লাসিক, আধুনিক সাহিত্যের। এঁকেছেন গীর্জার জানলা, থিয়েটারের সিলিং, পার্কের ম্যুরাল, ব্যালের সিনারি-কার্টেন-কস্ট্যুম-সেট, সেরামিক, পটারি, ট্যাপেস্ট্রি– সব মিলিয়ে শাগালের কাজের সংখ্যা দশ হাজারের বেশি, যা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। ১৮৭ টি শিল্পকর্মের প্রতিলিপি ও ১৫ টি প্রাসঙ্গিক ফটোগ্রাফে তার নমুনা ধরা রইলো, আর্ট পেপারে ছাপা আদ্যন্ত রঙিন এই বইয়ে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.