দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের পথে
ডঃ সমুদ্র বসু
'সৌরাষ্ট্র সোমনাথং চ শ্রীশৈলে মল্লিকার্জুনম।
উজ্জয়িন্যাং মহাকালমোংকারং মমলেশ্বরম।।
পরল্যা বৈজনাথং চ ডাকিয়ান্যাং ভীমশঙ্করম্।
সেতুবন্ধে তু রামেশং নাগেশং দারুকাবনে।।
বারণস্যাং তু বিশ্বেশং ত্রয়ম্বকম গৌতমী তটে।
হিমালয়ে তু কেদারং ঘুষ্ণেশং চ শিবালয়ে।।
এতানি জ্যোতির্লিঙ্গানি সায়ং প্রাতঃ পঠেন্নরঃ।
সপ্তজন্মকৃতং পাপং স্মরেণ বিনশ্যতি।।
শাস্ত্র মতে, শিবলিঙ্গের অর্থ হল অনন্ত। অর্থাৎ, যাঁর সূচনা বা অন্ত নেই। জ্যোতির্লিঙ্গ স্বয়ম্ভূ শিবের অবতার। জ্যোতির্লিঙ্গ অর্থাৎ শিবের জ্যোতি রূপে প্রকট হওয়া। এটি মানব নির্মিত নয়। এগুলি স্বয়ম্ভূ এবং সৃষ্টির কল্যাণ ও গতিশীলতা বজায় রাখার জন্য স্থাপন করা হয়েছে। সারা দেশে শতাধিক শিবলিঙ্গ থাকতে পারে। কিন্তু জ্যোতির্লিঙ্গ শুধু মাত্র ১২টি। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী যেখানে যেখানে জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে, সেখানে স্বয়ং শিব এক আলোকরশ্মি রূপে প্রকট হয়েছিলেন। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের প্রথমেই বলতে হয়, সোমনাথের কথা। গুজরাটের সৌরাষ্ট্রে এই শিবক্ষেত্রটি অবস্থিত। এখানে মহাদেব সোমেশ্বর নামে পূজিত হন। বলা হয়, মহাদেবের এই বিশেষ রূপের পুজো করলে জন্মজনিত দুঃখ থেকে মুক্তিলাভসম্ভব। ভক্তিভরে যিনি এই জ্যোতির্লিঙ্গের আরাধনা করেন তিনি মৃত্যুর পর শিবের মধ্যেই লীন হন। মহাদেবের দ্বিতীয় জ্যোতির্লিঙ্গটি অন্ধপ্রদেশের শৈলপর্বতে অবস্থিত। এখানে তিনি মল্লিকার্জুন নামে পূজিত। পুরাণমতে মহাদেবের এই বিশেষরূপ পূর্বপুরুষের মুক্তিলাভ ঘটাতে সাহায্য করেন। আবার কথিত আছে এই মন্দিরে পুজো দিলে পূজক রাজ ঐশ্বর্যের অধিকারী হন। এরপর তৃতীয় জ্যোতির্লিঙ্গ মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে অবস্থিত। এখানে মহাদেবের প্রকাশ মহাকাল রূপে। মহাকাল অর্থেই কালের অধিপতি। উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর শিবও ঠিক তেমনটাই নির্দেশ করেন। তাঁর আরাধনা করলে অকালমৃত্যু হয় না। এমনকি ভক্তের দীর্ঘায়ু বরপ্রাপ্তি হয় এই বিশেষ দেবস্থলে। তালিকায় এ ভাবে ভারতের ১২টি আলাদা স্থানে তাঁর ভিন্ন মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত। এ জীবনে লেখক এই দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছেন মহাদেবের করুণায়। সেই যাত্রাপথের বর্ণনা থেকে শুরু করে সেই স্থানের মাহাত্ম্য, জনশ্রুতি, ইতিহাস, মন্দিরের বর্ণনা থেকে শুরু করে পার্শ মন্দির গুলির পরিচয়, কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা, লেখকের অভিজ্ঞতা ও প্রতিটি জায়গায় থাকার হোটেলের নাম সহ যোগাযোগ নম্বর এই দু মলাটে রাখা হয়েছে। এই বই পড়ে আপনি যেমন এই দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ ভ্রমণ করার খুঁটিনাটি সংগ্রহ করতে পারেন তেমনি ঘরে বসে বইয়ের পাতার মাধ্যমে মানসভ্রমণও সম্ভব। ওম নমঃ শিবায়। হর হর মহাদেব।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি