গল্প হলেও মিথ্যে
বিশু পাল
প্রচ্ছদ : শ্রীময় দাস
বর্গের টানা পাঁচটা আছে, এই উইম্বলডনে। এবারে জিততে পারলে তারও হবে।
উইম্বলডনে না হলেও, সব মিলিয়ে লেভারের ঘাসের কোর্টে ন’টা মেজর। ওটা পরবর্তী চাঁদমারি।
আর… আর… গত সেপ্টেম্বরে বিয়ের পরে ব্রিজেট তাকে স্ল্যাম জিততে দেখেনি এখনও।
নবপরিণীতার সব অব্যক্ত অনুযোগ তাকে মিটিয়ে ফেলতে হবে। এই জুলাইতেই।
কয়েকশো মিটার দূরে সে বিদেশি ততক্ষণে হাঁটা লাগিয়েছে। দূরদেশ থেকে মারণ-বাতাস বয়ে এনেছে মারণবীজের খবর। এইমাত্র যে চিরকুটটা হাতে এল, তাতে… ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় না পৌঁছতে পারলে…
অচেনা বিদেশি, অথবা ঘাসের রাজা পিট— কেউই তখনো জানে না, অদৃষ্ট তাদের জন্য কী মিশ্র ললাট-লিপি লিখে চলেছে। আগামি তেসরা জুলাইয়ের খবরের পাতা ওল্টালে…
*****
আমেরিকা থেকে ভারত মহাসাগর যাত্রার পথে শুরু হল সে ডায়রি পড়া। লেখক ফ্রান্সের মানুষ, আঠেরো শতকের শেষদিকে বাস্তিল দুর্গের ভিত টলিয়ে দেওয়া ফরাসি বিপ্লবে তাঁর অংশগ্রহণের উল্লেখ রয়েছে। এককালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ল্যামার্কের মত যুগন্ধর বিজ্ঞানীর সহকর্মী; বিপ্লবের অস্থিরতা শেষে তিনিই বেরিয়ে পড়েন জাহাজে চেপে– অজানার উদ্দেশে।
ডায়রিতে তাঁর অভিযান, বিবর্তনবাদ নিয়ে ল্যামার্কের সঙ্গে তর্কাতর্কি ছাড়াও রয়েছে এক বিশ্বস্ত বন্ধুর কথা। জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে আহতও হয়েছিলেন ডায়রির মালিক। জীবনের শেষ ক’টা বছর তাঁর কেটেছিল ভারত মহাসাগরের বুকে এক অকিঞ্চিৎকর দ্বীপমালায়।
কিন্তু ডায়রির সঙ্গে পাওয়া ছবিগুলো? দু’শো বছর আগের সে ছবি হাতে আঁকা, নাকি ক্যামেরায় তোলা? অথচ প্রচলিত ইতিহাস বলে মানুষের উদ্ভাবিত প্রথম ক্যামেরার আবিষ্কার হতে তখনও কয়েক দশকের অপেক্ষা। ছবিতে ডায়রি-লেখক শ্বেতাঙ্গ সাহেবের পাশে অদ্ভুতদর্শন মানুষটির পরিচয়ই বা কী? সে-ই কি ফরাসি সাহেবের বিশ্বস্ত অনুচর?
ডায়রির শেষে মৃত্যুর দিন গুনতে থাকা লেখক কেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে গেছেন, ভারত মহাসাগরের ঐ বিচ্ছিন্ন দ্বীপে এক অমূল্য সম্পদ চিরকালের জন্য লুকিয়ে রেখে যেতে হচ্ছে বলে? এমন কী সম্পদ— যা তিনি ল্যামার্ককে দেখাতে চেয়েও পিছিয়ে এসেছিলেন কোনও অজানা ভয়ে?
বিশুপাল এর "ঘাস" এবং "সেলফি" গল্প দু'টির কিছুটা নির্জলা সত্যি। কিন্তু, বাকিটা?
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি