গীতেক নেহর
(কুড়মালি ভাষায় অনূদিত গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ।)
অনুবাদ : অভিমন্যু মাহাত।
ভূমিকা : শঙ্খ ঘোষ।
প্রচ্ছদ : দেবাশিস সাহা
কুড়মালি ভাষায় গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ — "গীতেক নেহর"।
১৯১০ সালে বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ থেকে প্রকাশিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত কাব্যগ্রন্থ 'গীতাঞ্জলি'। বইটিতে অন্তর্ভুক্ত ১৫৭ টি কবিতা ১৯০৮-১৯০৯ সালে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে গীতাঞ্জলির ৫১ টি এবং সমসময়ে লেখা আরও ৫২ টি কবিতা ইংরেজিতে নিজেই অনুবাদ করে রবীন্দ্রনাথ প্রকাশ করেন 'সং অফারিংস' কাব্যগ্রন্থটি। অবশ্য এটিকে ট্রান্সলেশন না বলে ট্রান্সক্রিয়েশন বলা অধিক সংগত।
ইংরেজিতে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বইটি বিপুলভাবে আদৃত হতে থাকে। ১৯১৩ সালে এ বইটির জন্য রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পান। এরপরই শুরু হয় তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা। অশান্ত পৃথিবীর মানুষ তাঁর কবিতা ও দর্শনের মধ্যে খুঁজে পান শান্তির স্পর্শ। আশ্রয়। পরবর্তীতে পৃথিবীর প্রায় সব ভাষাতেই অনূদিত হয় এই গ্রন্থটি। তবে সব ভাষাতে অনূদিত হলেও কুড়মালি ভাষাতে গীতাঞ্জলি নিয়ে সেরকম কোনো কাজ হয়নি। দুরূহ এই কাজটি করছেন তরুণ কবি অভিমন্যু মাহাত। কুড়মালি ভাষায় অনূদিত এই গ্রন্থটির নাম "গিতেক নেহর"। আদম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছেন বিশিষ্ট কবি ও চিন্তক শঙ্খ ঘোষ।
---------------------
কুড়মালি আদি জনজাতিদের ভাষা। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িষ্যা, আসাম, ছত্তিশগড়, বিহার-সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই কুড়মালি ভাষা প্রচলিত। সারা ভারতে আদি এই ভাষায় কথা বলেন প্রায় চার কোটি মানুষ। কুড়মি জনজাতিদের মূলত মাতৃভাষা কুড়মালি।
বাংলাদেশেও কুড়মালি ভাষাভাষিরা রয়েছেন। ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই কুড়মালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি। আশির দশক থেকেই ঝাড়খণ্ডের রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষোত্রীয় আদিবাসী ভাষা বিভাগে কুড়মালি পড়ানো হয়। পরে আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে (উড়িষ্যার কোলহান ও ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ) পড়ানো শুরু হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু স্কুলে নবম শ্রেণি থেকে কুড়মালি ভাষা পড়ানো হয়। পশ্চিমবঙ্গের সিধু-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও দুটি কলেজে স্নাতকস্তরে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। কুড়মালি ভাষার নিজস্ব কোনও লিপি নেই। অঞ্চল বিশেষে বাংলা, হিন্দি, অসমীয়া ও ওডিশি হরফ ব্যবহৃত হয়।
---------------------
লেখক পরিচিতি : অভিমন্যু মাহাতর জন্ম ১৯৮৩ সালের ১৬ অক্টোবর, পুরুলিয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম শরবেড়িয়ায়।
তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আওলা বরষা ধ্বনি' প্রকাশ ২০০৮ সালে। এরপর প্রকাশিত হয় 'মাটি' (২০১২, 'আমার নাম জঙ্গলমহল' (২০১৪), 'লাঙল, শুনছো?' (২০১৬) 'খিলিপান' (২০১৮)। ২০১৪ সালে মাটি কাব্যগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি (যুব) পুরস্কার। কুড়মালি ভাষায় প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দোহার (২০১৫)।
পেশা: সাংবাদিকতা।
শখ: ভ্রমণ।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি