আইডেন্টিটি
শুকদেব দাস
আপত্তি এসেছিল, তবু আই আই টিয়ান জিসান একটি মাল্টিন্যাশন্যাল কোম্পানির ম্যানেজমেন্টে যোগ দেয় জম্মু কাশ্মিরের রাজৌরীতে। রাতের জ্যোৎস্না ভেলায় পাহাড়ি উপত্যকার কোলে চাকতির মতো ঝুলে থাকা আকাশটা যখন নেমে আসে, তখন এক অভাবনীয় ভালোলাগায় ভরে যায় জিসানের মন।
এক আকস্মিক দুর্ঘটনায় পড়ে পরিচয় হয় কাশ্মিরী অপ্সরা রুহানীর সঙ্গে। ডাক্তারীতে ইনটার্ন করা যুবতী রুহানীর শরীরে তখন ভরা শ্রাবণের বান, সেই জোয়ারে ভাসতে ভাসতে কাছাকাছি হয় তারা। শিরশির করে ওঠে হৃদয়। জেগে ওঠে আদিমতা, একে অপরের পাশে থাকার আহ্বানে হাবুডুবু খেতে থাকে দুটি অবুঝ পাপড়ি মেলা হৃদয়।
কিন্তু হোঁচট খায় একসময়। বাধ সাধে ১৯৫৪ সালের 'The Constitution (Application to Jammu & Kashmir) order. এই আদেশনামা অনুযায়ী রুহানী জিসানকে বিয়ে করলে রুহানী বা তাদের সন্তান রুহানীর পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে। পিতৃ সম্পত্তির অধিকার থেকে কেন বঞ্চিত হবে রুহানীরা? কেন ভারতবর্ষের বড় অংশের থেকে আলাদ করে রাখা হবে এই সুন্দরী জম্মু কাশ্মিরকে? রাজ্যের কোনো মেয়ে ভিনরাজ্যের ছেলেকে বিয়ে করলে এভাবেই বঞ্চিত হতে হবে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে। রুহানীর কাছে এটা শুধু কিছু সম্পত্তি পাওয়ার বিষয় নয়।
অনেক বুঝিয়েও রাজি করাতে পারেনি জিসান। তাহলে কি তাদের সম্পর্ক আটকে যাবে কোনো এক অনিশ্চয়তার বাঁকে? দুজনেই দিশেহারা। সাইবেরিয়ার শৈত্যতা ধীরে ধীরে শুষে নেয় তাদের হৃদয়ের উষ্ণতা। ঠিক সেই সময়ে বাঁক নেয় ইতিহাস। ৫ আগস্ট, ২০১৯। ১৯৫৪ সালের আদেশকে বাতিল করে জারি হয় নতুন আদেশনামা। মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে যায় সমস্ত রসায়ন। জন্ম কাশ্মীর আর স্পেশাল স্ট্যাটাস নয়, আর পাঁচটা অঙ্গরাজ্যের মতো জুম্মু, কাশ্মীর বা লাদাখ। তাতে জিসান আর রুহানীর মধ্যেকার প্রাচীর সরে যাবে? আবার তারা কাছাকাছি হবে একে অপরের? -জানতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে এই কালজয়ী ভিন্নস্বাদের উপন্যাসটাকে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি