“প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখার একটা স্বভাব বোধহয় সেই শৈশব থেকেই আমার যাপন আমার মধ্যে বুনে দিয়েছে। কী করে আলোহীন সন্ধেয় উঠোন জুড়ে আলপনা দেয় জোনাকির দল, কী করে নির্জন স্টেশনে ধীরে ধীরে বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামে, কী করে ছাতারে পাখি বাচ্চাদের কমলা মুখে গুঁজে দেয় পোকার শব- সমস্ত খানিক গোগ্রাসেই গিলেছি বলা চলে।
আমার বাবা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ফোটোগ্রাফির সঙ্গে যুক্ত। কাজেই ছবি তোলাটা বাবার থেকেই পাওয়া এ আর বলার অপেক্ষা রাখে না। গল্প বলতে শেখার ঋণ রয়েছে আবার মায়ের কাছে। সহজাত বাঁদরামো থাকার জন্য আমাকে ছোটোবেলায় খাওয়ানো-দাওয়ানোর হ্যাপা ছিল বিস্তর। খেতে বসে একখানা গল্প যতক্ষণ না সম্পূর্ণ হচ্ছে; আমি ওঠবার নামগন্ধ করব না। মা-কাকিমাকে গল্প বলতে হত। লোডশেডিংয়ের মধ্যে, আলো- আঁধারিতে বসে, হ্যারিকেনের নিবুনিবু হলুদ আলোয় আমার মনে পড়ে কথকের গলা— “তারপর আমাদের উঠোনে পেঁপেগাছের ওপরে এক পা, আর ডাবাদের বাড়ির টালির চালে এক পা দিয়ে ভূতটা এসে দাঁড়াল।” আর থেকে থেকে যেন পেঁপেগাছের মাথার কাছটা নড়ে ওঠে।
আমি যখন ছবি তোলা শুরু করলাম, ছবি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করলাম- আমার উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট। ছবির সঙ্গে আমি মিলিয়ে দেব গল্প। এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে ছবি দেখতে দেখতে স্ক্রল করে যাওয়াই যেখানে দস্তুর; সেখানে আমার ছবি যেন একটা জগৎ তৈরি করতে, দর্শককে সেখানে আহ্বান করতে সক্ষম হয়। আমি ‘ফ্রেমবন্দি' শব্দটা পছন্দ করি না।”
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.