কালতন্ত্র, অমানিশি ও কুফর (একত্রে)
লাল মিয়া ফকির সিরিজ
দিবাকর দাস
কালতন্ত্র :
ভাগ্যের ফেরে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা তিন শিক্ষার্থী, আধুনিক চাষি হতে চলে আসে গ্রামে। উত্তরবঙ্গের এই গ্রাম এখনও উত্তরাধুনিকতার ছোঁয়া পায়নি। হ্যাঁ, স্মার্ট ফোন সবার হাতে আছে। তবে সেই স্মার্ট ফোনে অন্যের স্মার্টনেস দেখা আর নিজে স্মার্ট হবার মধ্যে ঢের তফাৎ। এরই মধ্যে ওদের তিনজনকে এমন এক ঘটনার সামনে পড়তে হয় তাতে সকল প্রকার আধুনিকতার ভিত নড়ে ওঠে শিহাবের। চোখের সামনে বান্ধবীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনা দেখে কিছুতেই সেসবকে উড়িয়ে দিতে পারে না শিহাব। গ্রামের মনু মাস্টারের ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে আগ্রহ বেড়ে যায় তার। একটু চেষ্টাতেই সে আলাপ জমিয়ে ফেলে প্রায় নিঃসঙ্গ মনু মাস্টারের সঙ্গে।
মনু মাস্টারের কাছ থেকেই শিহাব শুনতে পায় লাল মিয়া ফকিরের নাম। সেই ছয় পুরুষ আগের ফকিরের ক্ষমতা এখনও ব্যবহার করে চলেছে মনু মাস্টার। লাল মিয়া ফকিরের আলোচনায় ওরা চলে যায় দেড়শ বছর পেছনের সেই প্রাচীন বাংলায়।
তখন লাল মিয়া ফকিরের বাল্যকাল। ফকিরি ও তন্ত্রের দুনিয়ায় কেবল তার পথচলা শুরু হয়েছে। হঠাৎ করে সেই অঞ্চলে হারিয়ে যেতে থাকে আট থেকে দশ বছরের বালকেরা, হারিয়ে যাবার কিছুদিন পরে পাওয়া যায় তাদের প্রাণহীন শক্ত দেহ। কিন্তু কোনোরকম আঘাতের চিহ্ন সেই দেহে থাকে না। রূপগড়ের জমিদার সুখেন মজুমদার রোগশয্যা ছেড়ে হঠাৎ স্বাভাবিক চেহারায় কীভাবে বেরিয়ে আসেন? পিশাচ-সিদ্ধ মহা শক্তিশালী তান্ত্রিক নিশিকান্তের ক্ষমতা এবার কোন পিশাচকে জাগাতে ব্যবহৃত হচ্ছে? রূপগড়ে অন্দরে নিয়মিত গুমরে ওঠে কার কান্না ধ্বনি? ধীরে ধীরে আলোকে ক্রমশ সংকুচিত করে চলে অন্ধকার।
লাল মিয়া ফকির ছেলেমানুষ। কিন্তু একসময় সেই ঘন কালো অন্ধকারের সামনে সে ছাড়া দাঁড়ানোর মতো আর কেউ রইল না। বালক লাল মিয়া ফকির কি পারবে, সেই অন্ধকারের রেশ মুছে দিয়ে ভোরের আলো ফোটাতে?
অমানিশি :
কালতন্ত্র-র পর লাল মিয়া ফকির সিরিজ এর দ্বিতীয় বই অমানিশি।
ত্রিজল নামটা শুনতে যতো সুন্দর, যে আতঙ্ক ত্রিজলের মাটিতে এসে উপস্থিত হয়েছে সেই অন্ধকার তারচেয়েও ঘন। একের পর এক মানুষ মারা পড়তে লাগলো ত্রিজলে। ঠিক পাঁচ বছর আগের মতো।
পাঁচ বছর আগে যে মধু ওঝা গ্রামকে বিপদমুক্ত করেছিলো, সে ব্যর্থ হলো এবার। রীতিমতো কেঁদেকেটে বিদায় নিলো সে। ডাক পড়লো গিরিনাথ তান্ত্রিকের, গুরুর সাথে সহকারী হিসেবে ত্রিজলের মাটিতে পা রাখলো লাল মিয়া ফকির।
চৌদ্দ বছরের বালক লাল সহজেই বুঝে গেলো পরিস্থিতি। এই প্রেত যেনতেন কোন শক্তি নয়। শুধু শিকারের জন্যই শিকার করছে না সে, শিকারের মৃতদেহ ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে কি এক প্রবল আক্রোশে। শীঘ্রই সমাধান প্রয়োজন।
কিন্তু যেখানে গুরুই কোন থই পাচ্ছেন না, সেখানে লাল কি করবে?
কুফর :
অমানিশি-র পর লাল মিয়া ফকির সিরিজ এর তৃতীয় বই কুফর।
কমলগঞ্জের অভিজাত খাঁ বাড়িতে নেমে এসেছে এক কালো ছায়া। বাড়ির লোকের সামনে আচমকা বেরিয়ে আসছে একের পর এক অদ্ভুত প্রাণী, মারা যাচ্ছে পোষা প্রাণী। একের পর এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটছে। কেউ বলে জিনের আছর হয়েছে, কারোর ধারণা কালোজাদু চলছে। কিন্তু এসব ঘটনার সঙ্গে আলিম খাঁয়ের মেয়ে নুরীর কী সম্পর্ক?
কোনও উপায়েই কাজ হচ্ছে না। দোয়া পড়ার মধ্যেই অশুভ ঘটনা ঘটল, তান্ত্রিক নিজের বাণেই অসুস্থ হয়ে পড়ল। শেষ অবধি লাল এলো তার বাবা আর গুরুদেবের সঙ্গে। যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তা না আগে দেখেছে কেউ, না শুনেছে এমন কথা। লাল বুঝতে পারছে, সে অনেককিছুই শিখেছে বটে, কিন্তু এখানে যা ঘটছে, সেই জ্ঞান এখনও সে লাভ করতে পারেনি।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি