নির্বাচিত মন্টো

(0 পর্যালোচনা)
লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন
সাদাত হাসান মান্টো
প্রকাশক ভাষা সংসদ

মূল্য
₹535.00 ₹575.00 -7%
ক্লাব পয়েন্ট: 50
সংস্করণ
পরিমাণ
মোট দাম
শেয়ার করুন

নির্বাচিত মন্টো 

সম্পাদনা : বিতস্তা ঘোষাল 

এক জায়গায় মন্টো লিখেছেন, দুখ কী ইন্সানিয়ত কী কিসমত হ্যায়। দুখহী সআদত হসন মন্টো হ্যায়। ইয়ে দুখ হী আপ হ্যায়। ইয়ে দুখ হী সারী দুনিয়া হ্যায়।

মন্টো যখন কলেজে এফএ ক্লাসের ছাত্র, তাঁর শিক্ষকদের মধ্যে ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ আর সাহেবজাদা মাহমুদ আল-জাফর প্রমুখ ছিলেন, যাঁরা সর্বদা মন্টোকে সাহিত্যকর্মে উৎসাহিত করতেন। বারি সাহেব মন্টো ও হাসান আব্বাসকে রুশ ও বিপ্লবী সাহিত্যকর্মের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেন। কলেজ জীবনে মন্টো লাহোরের প্রসিদ্ধ উর্দু সাময়িকী 'হুমায়ুন' ও 'আলমগীর'-এর ফরাসি ও রুশ সাহিত্য সম্পর্কিত বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ ও সম্পাদনা করেন।

সাহিত্যচর্চায় বিশেষভাবে আত্মনিয়োগ করায় মন্টো এফএ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য পড়াশুনায় তেমন মনোযোগ দিতে পারেননি। ফলে মন্টোর এফ এ পরীক্ষায় দু'বার ফেল করেন।

১৯৩৬ সালের জানুয়ারি মাসে সৌভাগ্যক্রমে সাপ্তাহিক 'মোসাব্বির'-এর মালিক নাজির লুধিয়ানাভীর বার্তা পেলেন। বার্তায় তিনি মন্টোকে অবিলম্বে বোম্বাই যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। মন্টো কালবিলম্ব না করে বোম্বাই রওয়ানা হন। বোম্বাই-এর সাপ্তাহিক 'মোসাব্বির'-এ মাসিক ৪০ টাকা বেতনে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। তখন থেকে তাঁর কর্মজীবন শুরু। এছাড়া তিনি সিনে-সাপ্তাহিক 'মোসাব্বির'-এ চাকরির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন চলচ্চিত্র সংস্থায় মুন্সীর কাজও করতেন। একই সঙ্গে চলছিল তাঁর সাহিত্যচর্চা।

উর্দু ছোটোগল্পের কাঠামো প্রেমচন্দের হাতে তৈরি হলেও মন্টোর গল্পের সঙ্গে তাঁর গল্পের দুস্তর পার্থক্য। প্রেমচন্দের রচনায় গল্পের স্থান পরে, গল্পের উদ্দেশ্যই প্রধান হয়ে উঠেছে কিন্তু মন্টো উৎকৃষ্ট গল্প রচনাকেই গল্পের উদ্দেশ্য বলে মনে করেছেন। মন্টোর গল্পে প্রেমচন্দেরর মতো পুরোপুরি ভালো বা পুরোপুরি খারাপ মানুষ থাকে না, তাঁর গল্পের চরিত্রগুলি ভালো-মন্দ, সাদায় কালোয় মেশানো। 'বাবু গোপীনাথ', 'মোজেল'-এর মনো গল্প লেখার সময় মন্টো এই ধারাই অনুসরণ করেছেন, ফলে তাঁর গল্পের চরিত্রগুলিকে মানুষই বলে মনে হয়- একপেশেভাবে দেবতা বা শয়তান নয়। 

মন্টো যে সময়ে ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে গল্পগুলি লিখেছেন, তা অনুধাবন করলে তাঁর সাহসিকতায় আজও স্তম্ভিত হতে হয় এবং সেই সঙ্গে সমাজের পতিত, শোষিত, নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত নারীদের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম সহমর্মিতায় শ্রদ্ধাবনত হতে হয়। অশ্লীলতা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে মন্টো এক জায়গায় বলেছেন, নারী পুরুষের সম্পর্ক অশ্লীল নয়, তার উল্লেখ ও অশ্লীল নয়। যদি আমি কোনও নারীর স্তনের কথা উল্লেখ করতে চাই তাহলে তাকে স্তনই তো বলব; চিনাবাদাম, টেবিল বা ছুরি বলব না।অশ্লীলতার অভিযোগে মন্টোর গল্পের বিরুদ্ধে বারবার মামলা হয়েছে, সাজাও হয়েছে। কিন্তু মন্টো এজন্য বিন্দুমাত্র ভীত হননি বা ঘাবড়ে যাননি, সাহসের সঙ্গে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। একটি মামলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্টো দুঃখের সঙ্গে বলেছেন, 'চন্দ বরসোঁ সে মুকদ্দমে কায়ম করনেওয়ালোঁ কে নজদিক অদব কে মানী ইয়ে হ্যাঁয় কে অল্লামা ইকবাল মরহুম কে বাদ খুানে অদব কে সারে দরওয়াজোঁ মে তালে ডাল্কর সারী চাবিয়াঁ এক নেক বন্দে কে হওয়ালে কর দী হ্যাঁয়। কাশ অল্লামা মরহুম জিন্দা হোতে।' (লজ্জতে-সংগ-দস্তাবেজ)। অর্থাৎ, কয়েক বছর ধরে মামলাকারীদের কাছে সাহিত্যের অর্থ হল এই যে, স্বর্গত অল্লামা ইকবালের পর খোদা সাহিত্যের সমস্ত দরজায় তালা দিয়ে চাবিগুলো এক সৎ বান্দার হাতে তুলে দিয়েছেন। হায়! স্বর্গত অল্লামা যদি আজ বেঁচে থাকতেন। মন্টোর উপরও কম আঘাত আসেনি। কী না বলা হয়েছে তাঁকে, কে না বলেছেন। উর্দু সাহিত্যের এই মহান কথাশিল্পী ১৮ জানুয়ারি ১৯৫৫ সালে লাহোরে মারা যান।

পর্যালোচনা ও রেটিং

0 মোট 5.0 -এ
(0 পর্যালোচনা)
এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি