সম্পাদনা - তন্ময় ভট্টাচার্য ও আকাশ গঙ্গোপাধ্যায় প্রচ্ছদ - আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
‘ - তন্ময়দা, একটা কথা বলব?
- বল...
- আমার শুরু থেকেই স্বপ্ন, ইচ্ছে—মাস্তুল থেকে একটা কবিতার বই হবে। আকাশদা প্রচ্ছদ করবে।
- আকাশ জানে?
- না।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাস। হোয়াটসঅ্যাপে একটা ইচ্ছের কথা জানিয়েছিল অরিত্র সোম। মাস্তুল থেকে ওর বই হওয়ার ইচ্ছে। আকাশকে বলেওছিলাম সে-কথা। সামনের বছর অর্থাৎ ২০২৪-এর বইমেলায় বইটি প্রকাশের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। অরিত্রকে জানাইনি, কেন-না পরের বইমেলার তখনো বহু দেরি।
সেই বই হল। মাস্তুল থেকেই। প্রচ্ছদও করল ওর ‘আকাশদা’-ই। শুধু, সময় এগিয়ে এল খানিক। অরিত্র জানতে পারল না ওর ইচ্ছেপূরণের কথা। আর, একটি নির্দিষ্ট কবিতার বই বদলে গেল ‘যাবতীয়’ কবিতার সংকলনে। এমন বই আমরা চাইনি...
অরিত্র চলে গেল, আমাদের কাঁধে দিয়ে গেল পাণ্ডুলিপি প্রস্তুতির ভার। এমনটা বলে যায়নি, কিন্তু জানি—ও অবাক হত না এই খবরে। পাণ্ডুলিপি গোছানোর সময় যে মনোবেদনার মধ্যে দিয়ে যেতে হল, তাও কি দিতে চেয়েছিল আমাদের? একক বই হলে, প্রাথমিক পাণ্ডুলিপি তৈরি করত অরিত্রই। এক্ষেত্রে সে-সুযোগ ছিল না। ভুল-ত্রুটি সহ, সব দায়িত্ব নিতে হল আমাদেরই।
২০১৬ সালের কোনো এক সন্ধ্যায়, বেলঘরিয়ার এক পুকুরপাড়ে অরিত্র-র সঙ্গে প্রথম আলাপ আমার। কথায়-কথায় জানতে পারি—আমারই স্কুলের তিন বছরের জুনিয়র সে। সেই পুকুরসন্ধ্যায় ডায়েরি খুলে শুনিয়েছিল বেশ-কয়েকটা কবিতা। তখনো তার কবিতায় তীক্ষ্ণতা আসেনি, আসেনি সংযম। বয়সোচিত আবেগের দুর্বল বহিঃপ্রকাশ হয়েই থেকে গিয়েছিল। দিনে-দিনে বৈচিত্র্যময় কবিতাপাঠ, সমকালীন ও অগ্রজ কবিদের সঙ্গে আদানপ্রদান ওর লেখাকে পরিশীলিত করে তোলে। ২০১৮ থেকে ২০২৩-এর মৃত্যু-পূর্ববর্তী কাল কবি হিসেবে অরিত্র-র মূল সময়। বিস্মিত হয়ে দেখেছি, একদিন পুকুরপাড়ে ওর যে কবিতা পড়েছিলাম, তা থেকে শত যোজন দূরে সরে এসে কীভাবে নিজস্ব কবিতাভাষা তৈরির পথে এগোচ্ছে সে। কবিতাভাষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, নিজেকে খুঁড়ছে, ভাঙছে—অস্তিত্বের গুঁড়ো মাখিয়ে দিচ্ছে কবিতার সর্বাঙ্গে। অরিত্র জানত, বৃহত্তর সমাজে তার মূল পরিচয়—সে কবিতাপ্রয়াসী। সে-জন্য কবিতাকেই জীবনের প্রাণভোমরা করে নিয়েছিল সে। এমনকী, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত কবিতাই ছিল তার অন্যতম চিৎকার ও চেষ্টা।
আবার, কবিতা নিয়ে অভিমানও বড়ো কম ছিল না। কেন তার কবিতা যথেষ্ট আলোচিত হচ্ছে না, কেন কবি হিসেবে উপযুক্ত পরিচিতি পাচ্ছে না সে—এ-নিয়ে বিভিন্নজনের কাছে হতাশাও প্রকাশ করেছে একাধিকবার। মাঝেমাঝে মনে হয়, ওর চলে যাওয়ার পিছনে অজস্র কারণের একটা কবিতা-সংক্রান্ত অভিমানও। ওর কবিতা যদি নিয়মিত আলোচনায় থাকত, তজ্জনিত আত্মবিশ্বাস ওকে বেঁচে থাকার রসদ জোগাত অনেকটা। এই অভিমান যুক্তিযুক্ত কিনা, প্রযুক্তি-নিয়ন্ত্রিত সমাজে ক্রমশ একা-হতে-থাকা ছেলেটির শেষতম আশা ছিল কিনা এই স্বীকৃতিবাসনা—তা ভিন্ন তর্ক। তবে অরিত্র-র বিগত ছয়-সাত বছরের জীবনে বাংলা কবিতা কী তীব্র উপস্থিতি নিয়ে হাজির ছিল, তা আমরা জানি। খেয়াল করেছি, যতদিন কর্মহীন ছিল, ওর কবিতার ভাষা ও চলন একরকম। কর্মজীবন শুরুর (২০১৯) পর থেকেই ধীরে ধীরে অস্বস্তি ও অস্থিরতা গ্রাস করেছে তাকে। অরিত্র ভাবত, চাকরির জন্য কবিতাকে উপযুক্ত সময় দিতে পারছে না, ফলে কবিতাও মনমতো হচ্ছে না। উপার্জন-দায় ও কবিতা লেখার এই দ্বন্দ্বও কম ভোগায়নি। আর-পাঁচজন প্রকৃত কবির মতো ‘ভালো লিখতে না-পারা’-র অতৃপ্তি ফোঁপরা করছিল ভেতরে-ভেতরে। এর বাইরেও লেখা যেত অনেক কথাই। কিন্তু একজন কবি সম্পর্কে আলোচনা ‘কবিতার ব্যক্তি’-র মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাই শ্রেয়। এই গণ্ডিটুকু ভেঙে যাক, আমরা চাই না।
অরিত্র-র কবিতায় উঁকি দিলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক আচ্ছন্ন জগতের হদিশ পাই। অভিমান, অসহায়তা, হতাশা, বিষণ্ণতা, আক্রমণ সবই ধরা দিয়েছে কবিতার অবয়বে। বিভিন্ন মোটিফের ধারাবাহিক ব্যবহার ওর কবিতাকে ব্যঞ্জনাবাহী করেছে, সীমাবদ্ধও। কখনো আবার কবিতা লিখে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে কবিতাকেই। আলোর রেখা একেবারেই নেই বললে অন্যায় হবে; প্রথমদিকের কবিতাগুলিতে সেই বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্য রয়েছে মাঝেমধ্যেই। তবে একটা নির্দিষ্ট সময় পর, একমুখী হয়েছে লেখা। সেইসঙ্গে আরেকটা কথা না-বললেই নয়—অরিত্র সোমের মৃত্যুচেতনা। বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরে, ওর কবিতায় বিভিন্নভাবে ফিরে-ফিরে এসেছে মৃত্যুচিন্তা, জীবনে ইতি টানার ইচ্ছে। আশা হারিয়ে ফেলা এক কবির ভাষ্য হয়ে উঠেছে সেসব। অরিত্র-র কবিতার মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে ‘ডার্ক’ শব্দটি যথাযথ—এর উপযুক্ত বাংলা প্রতিশব্দ মনে পড়ছে না। কী প্রবল অস্থিরতা ও ঘূর্ণাবর্ত কাজ করত ওর মনের মধ্যে, কবিতাগুলি একসঙ্গে পড়তে-পড়তে স্পষ্ট হচ্ছে আরও। এই ‘ডার্ক’ চিন্তাভাবনা ও আত্মধ্বংসী ভাষাভঙ্গিই আলাদা করে তুলেছে অরিত্রকে। সমসাময়িক কবিদের মধ্যে, খুব কমজনের লেখাতেই এই অন্ধকার দিকগুলো ধারাবাহিকভাবে ফুটে উঠতে দেখা গিয়েছে। পাঠের পর যে দমবন্ধ ভাব জাগে, অরিত্র কবিতাকে হাতিয়ার করে সেই অনুভূতিও দিতে চেয়েছিল পাঠককে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, মৃত্যু-চেতনা ও মৃত্যু-ইচ্ছে তীব্রতর হয়েছে সময়ের সঙ্গে। বিশেষ করে শেষ দু-আড়াই বছরের লেখায় ফিরে-ফিরে আসত সেসব। অন্তর্জগতের সেই তোলপাড় শান্তও হল মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই। যেন আত্মহত্যার মাধ্যমে নিজের কবিতার সত্যই প্রতিষ্ঠা করে গেল অরিত্র।
অরিত্র-র কবিতায় দুটি চরিত্র—‘অজিতেশ’ ও ‘নীহারিকা’-র উপস্থিতি প্রবল। অজিতেশ ওর ‘অল্টার ইগো’, আর নীহারিকা কোনো-এক নারী—বাস্তবের মানুষ বদলে-বদলে গেলেও, চরিত্রগুলি ধ্রুব থেকে গিয়েছে। বোধকরি নিজের মনোজগতে ডুব দেওয়ার এ এক ভিন্ন পথ—কবিতায় আমি-তুমির বাইরে তৃতীয় ব্যক্তির ওপর সত্তা আরোপ করে মুক্তি খোঁজার চেষ্টা। সামগ্রিকভাবে, গড় ‘সুখী’ কবিদের খোপে অরিত্রকে ফেলা যায়নি কোনোদিনই। এ-কারণে মাঝেমধ্যে কবিতার ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণও হারিয়েছে। প্রবল ক্রোধ ও অস্থিরতা তাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ—শব্দব্যবহার বা আবেগকে সংযমের মোড়কে রাখতে চায়নি সেসব ক্ষেত্রে। কখনো-কখনো কবিতার কৃৎকৌশল ভেঙেচুরে লিখেছে শুধুমাত্র ‘টেক্সট’—ক্ষোভ, হতাশা ও অস্থিরতার খতিয়ান—অথচ উপযুক্ত মুন্সিয়ানায় সেসব কবিতাই হয়ে উঠেছে পরোক্ষে।
অরিত্র কি সমস্ত অস্থিরলিপিই (বেশিরভাগই অপ্রকাশিত) গ্রন্থিত করত? আমাদের অনুমান—না। অনেক লেখাই শুধুমাত্র নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করার চেষ্টা; বই গড়তে গেলে সচেতন সম্পাদনা কাজ করত মনে। বর্তমান সংকলনে তেমন লেখাও বেশ-কিছু রেখেছি আমরা। বুঝতে চেয়েছি একজন কবির মনের প্রতিটা শিরা-উপশিরা। কবি অরিত্র সোম-কে সামগ্রিকভাবে বুঝতে গেলে, ওর লেখা প্রতিটা শব্দের অলিগলিতে ভ্রমণ করা প্রয়োজন। হয়তো সারাজীবন ধরে সুইসাইড নোটই লিখে গেছে একটু-একটু করে! বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব পাঠকের।
আমাদের প্রজন্মের অনেকেই খাতায়-কলমে লেখার অভ্যাস থেকে সরে গেছে বহুদিন হল। অরিত্র কিন্তু দীর্ঘদিন সে-অভ্যাস ছাড়েনি। ওর বাড়ি থেকে কবিতা-ঠাসা চারটে ডায়েরি উদ্ধার করেছি আমরা, যেগুলোর অধিকাংশ লেখাই ইতিপূর্বে অপঠিত। ডায়েরির পাতা থেকে চিনতে পারি এক খুঁতখুঁতে কবিকে। কোনো লেখা কেটে দিয়ে লিখেছে—‘Nothing… ডুবতে হবে লেখাটায় আরও।’ কোথাও লেখা—‘বাতিল, ছিঁড়তে হবে।’ এছাড়াও অসংখ্য কাটাকুটি, সম্পাদনা ইত্যাদি তো রয়েইছে! একটা ডায়েরির পুস্তানিতে দেখতে পাই ‘একই হয়ে যাচ্ছে/নাকি আলাদা হবে? // নাহলে আর কি লাভ/এভাবে বেঁচে থাকাই বা আর কদ্দিন?’—নিজের সঙ্গে এ-জাতীয় কথোপকথনও। ডায়েরি থেকে অরিত্র-র হাতে লেখা বেশ-কিছু কবিতার প্রতিলিপি রইল এই সংকলনে।
বর্তমান সংকলনটি তিনভাগে বিভক্ত। প্রথমেই অরিত্র-র একমাত্র প্রকাশিত বই—‘রামকৃষ্ণ হার্ডওয়্যারস লেন’। ২০২০ সালে ‘তবুও প্রয়াস’ প্রকাশনী থেকে প্রথমে ই-বুক ও ২০২১-এ মুদ্রিতাকারে প্রকাশিত হয় একফর্মার এই বইটি। দ্বিতীয় অংশে ওর এ-যাবৎ প্রকাশিত কবিতাগুচ্ছ—মুদ্রিত পত্রিকা ও অনলাইনে। আমরা নিশ্চিত, বাদ পড়েছে বেশ-কিছু প্রকাশিত কবিতা; এমনকী, ‘অপ্রকাশিত’ বিভাগ থেকেও কিছু প্রকাশিত হয়ে থাকতে পারে। তৃতীয় অংশে রইল একগুচ্ছ অপ্রকাশিত কবিতা। অরিত্র-র অপ্রকাশিত লেখার সংখ্যা অগুন্তি হওয়ায়, বইয়ের আয়তনের কথা মাথায় রেখে এই পর্বে আমাদের নির্বাচনের দিকে এগোতে হয়েছে। সামগ্রিক সংকলনটির সঙ্গে মানানসই অনেকগুলি কবিতা রাখা হল, বাদ পড়ল আরও অনেক। অদূর ভবিষ্যতে কোনো উৎসাহী সম্পাদক-গবেষক অরিত্র-র লেখালিখি নিয়ে বিস্তৃত কাজ করতে চাইলে, আমরা সানন্দে হদিশ দেব সেসবের।
এইসব অসম্পূর্ণতা মেনে নিয়েই প্রকাশিত হল ‘অরিত্র সোমের কবিতা’ সংকলনটি। বলা বাহুল্য, বইটিকে আমরা ‘কবিতা সমগ্র’-এর রূপ দিতে চাইনি কখনোই। সংকলনের একটা বড়ো অংশ জুড়ে রয়েছে অরিত্র-র গদ্যাকারে লেখা বিভিন্ন অপ্রকাশিত টেক্সট। ও কি নিজেও এই লেখাগুলোকে ‘কবিতা’ বলে চিহ্নিত করত? জানার উপায় নেই। তবে প্রকাশিত বেশ-কিছু কবিতার বৈশিষ্ট্য ও অপ্রকাশিত লেখাগুলির কবিতাধর্ম বিবেচনা করে, ‘কবিতা’-র পরিচয়েই সেগুলিকে সংকলিত করেছি আমরা।
অরিত্র-র আত্মহত্যার তারিখ ১৪ এপ্রিল, ২০২৩। ওর জন্মদিন, অর্থাৎ ৭ আগস্টে সংকলনটি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এপ্রিল মাসেই। অন্যদের সহযোগিতা ছাড়া এত অল্প সময়ের মধ্যে এই বই তৈরি করা সম্ভব ছিল না। অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন, সাহায্য করেছেন, হদিশ দিয়েছেন বিভিন্ন লেখার। অভিষেক নন্দী, অর্ঘ্যকমল পাত্র, অর্ণব বসু, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, সোহম দাস, শাশ্বতী সরকার, অলোকপর্ণা, অনিমিখ পাত্র, শুভদীপ সেনশর্মা, সুমন সাধু, তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়, শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্তর চক্রবর্তী, নীলাঞ্জন দরিপা, সেখ সাহেবুল হক, শুভদীপ চক্রবর্তী, জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায়, অমিত মণ্ডল, রাজর্ষি দে, সৈকত সরকার, অর্পণ পাল, তন্ময় কোলে, সৌমেন চট্টোপাধ্যায়, মণিদীপা শীল, সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপ্তিপ্রকাশ দে, পৃথ্বী বসু, অরিন চক্রবর্তী, উৎসব চৌধুরী প্রমুখের কাছে আমাদের ঋণ অপরিশোধ্য। বইয়ের প্রচ্ছদ তৈরি করল আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়, অরিত্র-র ইচ্ছানুসারেই। প্রকাশের গুরুদায়িত্বও পালন করল সে-ই।
বইয়ের বাইরেও থেকে যায় ব্যক্তিগত কিছু স্মৃতি ও যন্ত্রণা। কবিতা নয়, ঘোর বাস্তব সে-সব। আত্মহত্যার খবর শুনে ওর ঠিকানায় দৌড়ে যাওয়া, বিছানায় নির্জীব অরিত্র-কে দেখে মনে হওয়া—জ্ঞান হারিয়েছে হয়তো, উঠে পড়বে এক্ষুনি। নাড়িতে আঙুল রেখে স্পন্দন খোঁজার চেষ্টা। সেই পর্ব থেকে, পরের দিন আড়িয়াদহ শ্মশানে, আগুনের ভেতর ধীরে ধীরে প্রবেশ প্রত্যক্ষ করা। অব্যক্ত এক রাগে গুমরে মরা সারাক্ষণ। ওর মা-বাবার কান্না, আমাদের অসহায়তা ও অপরাধবোধ—পরিচয়, যাপন, মৃত্যু ও দাহের মধ্যে দিয়ে, কবিতার বাইরেও অনেককিছু দিয়ে গেল আমাদের। চৈত্র সংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ—দিনমাহাত্ম্যের থেকেও তীব্র হয়ে রইল স্নেহাস্পদ এক ভাইয়ের চলে যাওয়া। এই সংকলন সেইসব শ্মশানবন্ধুদেরও, যারা পয়লা বৈশাখের বিকেল-সন্ধেয় অবিশ্বাস করতে চেয়েছিল অরিত্র-র অনুপস্থিতি। তারপর, সফল না-হয়ে, আগুন ও নদীর হাতে তুলে দিয়েছিল দেখে রাখার দায়িত্ব।
যেতে দেওয়া সহজ, তারপরও তাকে ধারণ করাই কঠিন। অরিত্র-র জন্য আমরা যেন সেই কঠিন কাজটাই করে যেতে পারি...’
তন্ময় ভট্টাচার্য
জুলাই, ২০২৩
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.