পাণ্ডলিপির শেষ পাতা
সমীরণ গুহ
"শীতের রাতে পর্দায় ঘেরা সাইকেল রিকশার মধ্যে তখন এক নিথর, নিষ্কম্প জগৎ। অভিষেক ও রাগিণী অর্জুনের দৃষ্টি নিয়ে দু'জন দু'জনের চোখই দেখে চলেছে। গভীর সেই চাউনিতে আরোহীরা সম্মোহিত। তারপর রাগিণীর নিঃসংকোচের এক চুমোয় আচ্ছন্ন হয়ে অভিষেক সেই রাগিণীকে আঁকড়ে ধরেই কাঁপতে লাগলো!"
------------------
আগ্রার নিষিদ্ধ পল্লীর আস্তাকুঁড়ের রুক্ষ জীবনে বড় হয়ে ওঠা অভিষেক জানতো না ভালোবাসা কী জিনিস! অথচ আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম. এ পঁচিশের রাগিণী রোহোতাগির স্বপ্ন ওই নিষিদ্ধ পল্লীরই পরিচয়হীন অনাথ শিশুদের মানুষের মতো 'মানুষ' করে গড়ে তোলার! আর আন্তরিকভাবে সেই কাজটা করতে করতেই কখন যেন রাগিণী ভালোবেসে ফেলে অভিষেককেই।
উপলব্ধির সেই দরজায় দাঁড়িয়ে অভিষেকের আরও এক উপলব্ধি হলো, এই ভালোবাসার ঊর্ধ্বে উঠে তাকেই হতে হবে দায়িত্বশীল। অনাদর- অবহেলার মধ্যে খুঁটে খাওয়া শিশুদের জীবনে পরিবর্তন আনতে হলে চাই অর্থ, প্রচুর অর্থ। আর মহৎ কাজের জন্য সেই অর্থ বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত তরুণ শিল্পপতি শৌর্য শিভলকারও- রাগিণীর ওপর যার স্পষ্টতই রয়েছে আরও এক গভীর টান।
দায়িত্বশীল প্রেমিক হিসেবে অভিষেকের তখন অন্য রূপ-রাগিণী রোহোতাগির প্রতি আত্মনিবেদনের অর্ঘ্য যেন সেই প্রেমেরই অন্য মহিমা। সেই মুকুল ত্যাগ ও নিবিড়তায়। ভালোবাসার মেয়েটির জন্য আত্মনির্বাসন, সেখানে কী জেগে ওঠেনি না পাওয়ার কান্না? এখানেই বেদন-ভরা ভালোবাসার নৈবেদ্য অভিষেক সমর্পণ করে দিল শৌর্যকে, যে সার্থক করে তুলতে পারবে রাগিণীর জীবনানুরাগ।
ছোটখাটো সুখ-দুঃখের পাওয়া না পাওয়ার গতানুগতিকতা নয়, বঞ্চিত- অবহেলিত শিশুদের মঙ্গলচিন্তায় সমীরণ গুহ-র এই উপন্যাসের লাবণ্য যে অন্য ধারার তা সহজেই অনুভব করা যায়!
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.