শিকারের গল্প

(0 পর্যালোচনা)
লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন
সম্পাদিত

মূল্য
₹428.00 ₹450.00 -5%
পরিমাণ
মোট দাম
শেয়ার করুন

শিকারের গল্প 

সম্পাদনা : অশোক কুমার মিত্র ও রূপক চট্টরাজ 

শিকার করা এখন আইনত নিষিদ্ধ, তবে একসময় তা ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয়, ঠিক যেমন ছিল বই-পড়ুয়াদের কাছে শিকারের গল্প। সেই সমস্ত রোমহর্ষক গল্প নিয়েই নতুন সংকলন 'শিকারের গল্প'। 

রামায়ণে পঞ্চবটি বনে যদি সীতা অলীক স্বর্ণমৃগর জন্য তাঁর সঙ্গীদের কাছে নারীসুলভ আবদার না করতেন তাহলে বাল্মীকি-কে ‘অরণ্যকাণ্ডে’র পর আর চতুর্থ অধ্যায় ‘কিষ্কিন্ধ্যা কাণ্ড'ও লিখতে হত না, ‘লঙ্কাকাণ্ড' তো দূরের কথা। মৃগ থেকেই মৃগয়া। রাজা দশরথ মৃগয়াকালে এক হস্তিশাবকের জলপানের ঢক ঢক শব্দ শুনে শব্দভেদী বাণে তাকে বিদ্ধ করলেন, একবার তাঁর শিকারকে চোখের দেখারও প্রয়োজন বোধ করলেন না, কারণ তিনি নিপুণ শিকারি, শব্দ শুনেই শিকারের অবস্থান বুঝতে পারেন। কিন্তু বাণ-বিদ্ধ বালকের মৃত্যুকালীন আর্তনাদে তাঁর ভ্রম টুটল, বাণ-বিদ্ধ বালকটি ছিল অন্ধমুনির একমাত্র অবলম্বন। বৃদ্ধ পিতামাতার জন্য কলসি ভরে জল সংগ্রহ করতে এসেছিল। যে শব্দকে দশরথ হাতির জলপানের শব্দ শুনেছেন তা প্রকৃতপক্ষে কলসিতে জল ভরার শব্দই ছিল। রাজা নিজের ভ্রম বুঝলেন এবং ছুটে গিয়ে অন্ধমুনির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। ক্রুদ্ধ মুনি তাঁকে বললেন, আমার একমাত্র অবলম্বন পুত্রকে হারিয়ে আমি যেমন মৃত্যুর মুখে পড়েছি, আমি অভিশাপ দিচ্ছি, তোমারও তেমন পুত্রশোকে মরণ ঘটবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে রামায়ণ মহাকাব্য বা সেকালের জীবনকথাটি রচিত-ই হত না মৃগয়াকাণ্ডের মহাভ্রমটি না ঘটলে। আরও পুরাণকথায় রাজন্যদের মৃগয়ার বিচিত্র বিবরণ রয়েছে। যখন লিপি আবিষ্কার হয়নি তখনও মানুষ তার শিকার কীর্তি চিত্রলিপিতে ধরে রেখেছে, আলতামিরাসহ নানা গুহাচিত্রে।

আর এ যুগে, বিশেষত রাজা-মহারাজা, নবাব-বাদশাহ, পরে ইংরেজ রাজত্বে পূর্বোক্তদের সঙ্গে সাহেব-সুবো আর তাদের সঙ্গী এদেশীয় অভিজাত মানুষেরা শিকার নিয়ে আরও বেশি আগ্রহী হলেন—বিশেষত বিদেশি পদস্থ অতিথিদের সম্মুখে নিজেদের হিম্মত প্রদর্শনের বাসনায়। তাঁরা শিকারে নিজেদের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন বাড়ির ড্রয়িংরুমে স্টাফড্ করে রাখা আস্ত বাঘের মাথা বসিয়ে বা তার ট্যান করা চামড়া ঝুলিয়ে। এই ধরনের প্রদর্শনীতে শিংওয়ালা হরিণের মাথা, তার ট্যান করা চামড়া, হাতির দাঁত ও অন্যান্য পশুর দেহাংশও দেখা যায়। কোনো বাড়িতে পৃথক প্রদর্শন কক্ষও নজরে পড়ে।

এঁদের বাইরেও কিছু শিকারি আছেন যাঁরা বন-ঘেঁষা গ্রামগুলিতে বসবাসকারীদের কাছে ঈশ্বরতুল্য। নিজেদের শৌর্য প্রকাশের জন্য নয়, বনের প্রতিবেশী এই গ্রামের মানুষদের মাঝে মাঝে তাঁদের গৃহপালিত পোষ্যসহ কখনো কখনো বন্য পশুর আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে জীবনযাপনই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখন এই শিকারিরা গ্রামবাসীদের আবেদনে বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথায় সেই ‘দুষ্টের’ নিধনে এগিয়ে এসে তা সম্পন্ন করেন এবং ফের গ্রামের জীবন স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পায়। তা ছাড়া, আরও কিছু শিকারির দেখা পাওয়া যায় যাঁরা গ্রামেরই মানুষ—জীবনের প্রয়োজনে তাঁরাও শিকারি হয়ে ওঠেন।

এই সমস্ত নেশায়-পেশায় শিকারিদের শিকারে অংশ গ্রহণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে তাঁদের মুখে শোনা রোমাঞ্চকর কাহিনির সংকলন "শিকারের গল্প", যা চমকিত করার সাথে সাথে উচ্চ স্তরের সাহিত্য হিসেবে শিশু-কিশোর মনে গেঁথে দেবে কিছু অবশ্য-শিক্ষার পাঠ।

পর্যালোচনা ও রেটিং

0 মোট 5.0 -এ
(0 পর্যালোচনা)
এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

সংশ্লিষ্ট বই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি