শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ভাবনায়
তপন মুখার্জী
ব্যাকুলতাই মুক্তির উপায়। জগতে সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয়ের কারণ স্বরূপ হলেন সেই এক এবং অদ্বিতীয় ব্রহ্মোদ্ভূত মহাশক্তি মহামায়া তিনিই আবার একাই সংসার বন্ধন এবং মুক্তির একমাত্র কারণ। শ্রীশ্রীচণ্ডী মন্ত্রে মহাশক্তির মহামায়ার বর্ণনায় বলা হয়েছে -
'সা বিদ্যা পরমা মুক্তি হেতু ভূতা সনাতনী
সংসার বন্ধনহেতুশ্চ সৈব সর্বেশ্বরেশ্বরী'
ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবও বলেছেন, 'বন্ধন ও মুক্তি এই দুইয়ের কর্তাই তিনি'। আমাদের দেশীয় ভাষায় বলা যায়-যিনি রক্ষক তিনিই ভক্ষক ভগবানের মায়াশক্তির দ্বারাই জগৎ স্থিতিশীল আছে। মহামায়ার স্বরূপই প্রপঞ্চতা করা, এঁকেই পুরাণ বলছেন-'অঘটনঘটনপটীয়সী ব্রহ্মাত্মিকা শক্তি' বস্তুর সত্য এবং মিথ্যা নির্ণয়ে মানুষের কাছে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই তাঁর এই জগতের সর্বশ্রেষ্ঠরূপ, তাই তাঁকে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বলা হয়েছে-'তিনি ভ্রান্তিরূপেণ সংস্থিতা' সংসারে বদ্ধজীবকে তিনি কামনা বাসনা দিয়ে ভুলিয়ে রেখেছেন। জীবের যা কিছু দুঃখ কষ্ট, সব এই কামনা বাসনার কারণ। এই কথাটি জানা সত্ত্বেও ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ভাষায় সেই কামিনী কাঞ্চনকেই ভালোবেসে তার থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না যেমন গুটিপোকা নিজেই গুটি তৈরি করে তাতেই আটকে মারা যায়, অথবা সংসারবদ্ধ জীব যেন সেই মরুভূমির উট। কাঁটাঘাস খেয়ে দরদর করে মুখ কেটে রক্ত পড়ে, যন্ত্রণায় সাময়িকভাবে কাঁটাঘাস খাওয়া বন্ধ করে, কিন্তু যেই ব্যথা কমে যাওয়া, অমনি সব ভুলে আবার ওই কাঁটা ঘাসই খাওয়া। সুস্বাদু কাঁটাঘাসকে কিছুতেই যেন ছেড়ে দিতে পারে না। তেমনি বদ্ধজীবও সংসারে এত যে দুঃখ কষ্ট জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করে, তবুও ওই সংসারের স্ত্রী-পুত্র ঘরবাড়ি টাকা পয়সা নিয়েই থাকতে ভালোবাসে -যার কারণ শ্রীশ্রীচণ্ডী মতে 'মহামায়া প্রভাবেন সংসার...........
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.