সীতা : যোগেশচন্দ্র চৌধুরী
সম্পাদনা ও পরিমার্জনা : অংশুমান ভৌমিক
যোগেশচন্দ্র চৌধুরীর সীতা বাংলা সাধারণ রঙ্গালয়ের এক মোড়-ঘোরানো নাটক। গিরিশচন্দ্রের অনুরাগী এই নাটককার সীতার চরিত্রের আধুনিক ব্যাখ্যান তো বটেই, শম্বুক-হত্যার চুলচেরা বিশ্লেষণে যে মুনশিয়ানা দেখিয়েছিলেন তা আজও প্রবলভাবে প্রাসঙ্গিক। শিশিরকুমার ভাদুড়ীর প্রয়োগনৈপুণ্যে ভর করে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ অগাস্ট কলকাতার বুকে মনোমোহন নাট্যমন্দিরে প্রথম মঞ্চস্থ হয় সীতা। প্রজানুরঞ্জনের জন্য যে সীতাকে একদিন বিসর্জন দিয়েছিলেন রামচন্দ্র, নাটকের শেষে তাঁকেই 'হৃদয়ের উপবাস-আর আমি সহিতে না পারি' বলে হাহাকার করতে শোনা যায়। সাড়া পড়ে। চিত্তরঞ্জন রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্র প্রমুখ আলোড়িত হন। লোকের মুখে মুখে ফিরতে থাকে সীতা-র সংলাপ, হেমেন্দ্রকুমার রায়ের লেখা সীতা-র গান 'অন্ধকারের অন্তরেতে অশ্রু-বাদল ঝরে'। কলকাতা-ঢাকা সমেত বাংলায় নানান জায়গায়, দিল্লির রাজদরবারে, এমনকি মার্কিন মুলুকে মঞ্চস্থ হয়ে নজির গড়ে সীতা। আজও তার অনুরণন চলে আমাদের নাট্যশালায়।
প্রথম মুদ্রণ অনুসরণে যোগেশচন্দ্র চৌধুরীর সীতা-র এই শতবার্ষিকী সংস্করণ নাটকটির সঙ্গে বাঙালির এতদিনকার যাপনচিত্রকে তুলে ধরতে চায়। তাছাড়া স্তুতির পাশাপাশি নিন্দামন্দ খুব কম জোটেনি সীতা-র বরাতে। রামচন্দ্রের চরিত্রায়ণে ক্ষুব্ধ হয়ে সীতা নিষিদ্ধ করার ডাক দিয়েছিলেন বারাণসীর এক পণ্ডিত সঙ্ঘ। পাশে পেয়েছিলেন সমসময়ের একদল প্রভাবশালীকে। অথচ বিংশ শতকের কৃতী বাঙালিদের স্মৃতিকথায় সীতা-র প্রতি কতই না মুগ্ধতা ঝরে পড়েছে! নাটকটির প্রামাণ্য পাঠের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া সেইসব উজ্জ্বল উদ্ধার এই সংস্করণটিকে পূর্ণাঙ্গ করে তুলেছে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি