সকলেরই জানা ধর্মচর্যার প্রাথমিক শর্ত হল,সততা, পবিত্রতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ, অহিংসা, ধৈর্যশীলতা, সমবেদনার পাশাপাশি আরও মানবিক উৎকর্ষে সত্যের পরম জ্ঞানকে মুখ্য স্থান দিতেই হবে। গত ৬০ বৎসর এবং সেই সঙ্গে ৫৫ বৎসর বেলড়ের সদস্য হয়ে, গভীর নিষ্ঠায় রামকৃষ্ণ সারদা দেবী এবং বিবেকানন্দের কথা, নীতি, আদর্শ এবং তাঁদের জীবনযাত্রার খুঁটি নাটি অনুধ্যান করে, সমস্ত বিষয়ই নানা কৃত্রিম প্রক্রিয়াকরণের প্রশ্ন আমাকে কুরে কুরে অস্থির করে তুলছিল। আমি সত্য তথ্য জানার উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে আমার পাওয়া তথ্যের বইয়ের copy সহ, বেলুড়ে চিঠি লিখে গেছি। কিন্তু ৮/১০ বৎসর তথ্য সহ চিঠি লেখার পর একটি উত্তর পাই।
শ্রীমান নিরঞ্জন
তোমার ৮/১২/১৪ তারিখের চিঠিতে সব জানলুম। এ ধরণের প্রতিবাদ করলে বই এবং লেখকের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। তাই আমরা এ সব করি না। ভক্তরা এর প্রতিবাদ নিশ্চয় করবে।তুমিও কর। কি করলে জানিও।
শ্রীশ্রী ঠাকুর ও শ্রীশ্রীমা তোমাদের সর্ববিধ মঙ্গল করুন। তোমরা আমার শুভ আশীর্বাদ জানবে।
ইতি
শুভাকাঙ্ক্ষী
স্বামী আত্মস্থানন্দ
______
না ,আমার এই বইটিতে এই সব কিছই লিখিনি। কারণ রামকৃষ্ণ এবং সারদা দেবী ছিলেন গ্রাম্য, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অশিক্ষিতও বলা যায।
কিন্তু বিবেকানন্দ ছিলেন, উচ্চ শিক্ষিত , কলকাতার মানুষ, শাস্ত্রজ্ঞ, এবং proof ছাড়া কিছুই বিশ্বাস করেন না, বলে প্রচারিত। সে কারণেই বিবেকানন্দের কথা সত্য ধরে নিয়ে, তাঁর কথা অনুযায়ী, তাঁকেই বোঝা বা তাঁরই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মচর্যা, অনুধ্যান করে সন্তুষ্ট হতে চেয়েছিলাম। দেখা যাক বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ এবং সারদা দেবীর বিষয়ে কি বলেছেন।
রামকৃষ্ণের শ্রেষ্ট শিষ্য বিবেকানন্দ বলেছেন- - - -- "রামকৃষ্ণ পরমহংস যে ভগবানের বাবা তাতে আমার সন্দেহ মাত্র নেই।" কি ভাবে জানলেন।
বলেছেন- - - -- - "মা ঠাকুরাণী গেলে সর্বনাশ। শক্তির কৃপা না হলে কি ঘোড়ার ডিম হবে।" তিনি কি গুরুনার কথা মানতেন।
বলেছন- - -- " রামকৃষ্ণকে আমি শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাম শ্রীচৈতন্য বুদ্ধ যীশু সকলের থেকে বড় বলে জানি, মানা তো ছোট কথা।" কি দিয়ে মাপলেন। কেউ তঞ্চকতা বলতে পারে কি না।
বলেছেন-- - - - -"রামকৃষ্ণ অবতার বরিষ্ট।" সমস্ত অবতারদের থেকে বড় কি ভাবে বলেছেন।
বলেছেন- - - - - " বাবুরামের মার বুড়ো বযসে বুদ্ধির হানি হয়ছে। জ্যান্ত দুর্গা ( সারদা দেবী) ছেডে মাটির দুর্গা পুজো করতে বসেছে।" সারদার কথা কি তিনি মানতেন ।
বলেছেন -- - - -- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মেছিলেন কি না জানি না। বুদ্ধ চৈতন্য একঘেয়ে, রামকৃষ্ণ পরমহংস the latest & most perfect." কি ভাবে তিনি বলেছেন,"বুদ্ধদেব আমার ইষ্ট,আমার ঈশ্বর"
বলেছেন- - - -- "তাঁকে ( রামকৃষ্ণকে) যে বিশ্বাস করে না তাঁর জন্ম বৃথা।" তিনিই বলেছেন, "রামকৃষ্ণ ঈশ্বর অবতার এদেশে (বিদেশে) কি চলে ?
বলেছেন- - - - রামকৃষ্ণের জন্মদিন থেকেই সত্যযুগের উৎপত্তি হইয়াছে।" বিবেকনন্দ কি যুগ ভাঙাগড়া অধীশ্বর ছিলেন কি না, নাকি সবই প্রচারের কায়দা।
আরও বলেছেন- -- - "জগজ্জননী ( সারদা দেবীকে)।" রামকৃষ্ণকে বলেছেন- - "জীবন্ত ঈশ্বর।" এ সব ছাড়াও আরও অনেক কথা বলে গেছেন।
সুতরাং শাস্ত্রজ্ঞ উচ্চ শিক্ষিত proof ছাড়া যিনি বিশ্বাস করণ না, সেই বিবেকানন্দে কথা মানতেই হবে। দেখতে হবে তিনি কি সত্যিই শাস্ত্র মেনেই কথাগুলো বলেছেন, নাকি কোন অভিসন্ধি নিয়ে কৃত্রিম প্রচার করে গেছেন । বিচার করে দেখতে হবে, সনাতনি বা চিরন্তন কথা, যেমন-- সততা পবিত্রতা অহংসা ধৈর্যেশীলতা সমবেদনা আত্মনিয়ন্তণের পাশাপাশি অনেক মাননিক উৎকর্ষজনক উপায়ে ও আচার বিচার থেকে পরম সত্যের জ্ঞানকে মুখ্য স্থান দিয়েই গুরু রামকৃষ্ণ এবং গুরুমা সারদা দেবীর প্রতি এই সব মন্তব্য করেছেন কি না। নাকি প্রচারপ্রিয় হাটে বাজারের ভন্ড ধর্মের কারবারিদের মতো ঐ সব মন্তব্য করে সমাজকে অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
এখানে বলা হয়েছে, কিভাবে বিবেকানন্দ নিজের অসত্য মনগড়া কথাকে সত্যতায় নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করে মানুষকে বোকা বাানিয়ে গেছেন। কারণ মনোবিজ্ঞান পড়া তিনি বুঝেছিলেন, একবার যদি অসত্য কথা বার বার বলা যায় মানুষের বিশ্বাস হয়ে যায়। যদি তাঁর গুরু ও গরু মার বিষয়ে ভগবান ভগবতী প্রচার করে দিতে পারেন, তবে মানুষ কিছুতেই আর অবিশ্বাস করতেই পারবে না। কারণ নতুন করে কিছু তারা বলে দিলে তাদের বোঝার দুর্বলতা বা অযোগ্যতা প্রকাশ পেয়ে যাবে, তাই ভুলকেই আঁকড়ে ধরে থাকবে।
বিবেকানন্দ তাঁর চারিত্রিক বৈকল্য মছে ফেলার জন্য বার বার বলেছেন - - -- "আসল কথা হচ্ছে গুরভক্তি মৃত্যু পর্যন্ত গুরুর উপর বিশ্বাস।" বলেছেন - - -"ঈশ্বর মহিমাময় তিনি আমাকে মিথ্যাচারী হইতো দিবেন না।" বলেছেন- - - -আমরা যেন মৃত্যু পর্যন্ত এবং এবং জীবনের পর জীবন ব্যাপিয়া সত্যকে আঁকড়াইয়া থাকি।" বিবেকানন্দ কথায় পরিষ্কার বোঝা যায়, তিনি মনোবিজ্ঞানকে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যেই , মনোবিজ্ঞানের Suggestion সূত্রটি কাদে লাগানোর জন্যই বার বার তাঁর সত্য মানার কথা বলেছেন। তিনি বিদেশিনিদের দেখেই ৫/৬ মাস থেকে তাদের হিন্দুধর্মের
পবিত্র মুক্ত জীবন্মুক্ত বলেছেন। যাতে তাঁর হিন্দু সন্ন্যাস পবিত্রতা নামক খেলো কথায় ভোগী দেহসুখি বিদেশিনিদের সঙ্গে মেলামেসার কোন অসুবিধা না হয়। বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর পরই, তাঁর সমস্ত তঞ্চকতা লোক ঠকানোর প্রশ্ন সমূলে ধুয়ে মুছে পরিশুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে , প্রচার করেছেন, রামকৃষ্ণের মত্যুর আগেই তাঁর ভেতরে রামকৃষ্ণ এবং মাকালী তাঁর ভেতরে ঢুকেন তাঁকে দিয়ে সব কাজ করাচ্ছেন। অর্থাৎ রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর সমস্ত চারিত্রিক বৈকল্য একসঙ্গে মুছে ফেলার চাতুর্য
করে গেছেন। আরও অনেক বলা যায়।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.