আদালত-মিডিয়া-সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি
দেবশিস সেনগুপ্ত
প্রবাল চৌধুরী
পরমেশ গোস্বামী
ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়ে গেছে এক যুগ আগে। কিন্তু কী আশ্চর্য, আমরা একটা আস্ত প্রজন্ম কখনও বিষয়টা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করিনি। কারণ আমরা গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলির উপর আস্থা রেখেছিলাম। আইনী বিশেষজ্ঞতায় চোখ বন্ধ করে ভরসা করেছিলাম। ফলত যে পৃথিবী আমাদের চারদিকেই ছিল এতদিন, তাকে আমরা চোখ খুলে দেখিনি। 'সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছেনা' যে কেউই বলতেই পারতাম, শুধু দূরবীন বৃহস্পতির দিকে তাক করার প্রয়োজনবোধ করিনি। কারণ আমরা সাংবিধানিক আপ্তবাক্যে বিশ্বাস রেখেছিলাম। ধর্মগ্রন্থের মিথে আস্থা রেখেছিলাম। আইন-আদালত নামক ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিলাম।
এই বই সেই বিশ্বাসের মিথটিকে ছিঁড়ে ফেলে। প্রাথমিক এবং প্রদত্ত বিষয়গুলিকে চ্যালেঞ্জ করতে বাধ্য করে। হাতে তুলে দেয় প্রশ্নচিহ্নের যাদুদন্ড। বইটি ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যের ফাঁকগুলি তুলে ধরে। তুলে ধরে বিকল্প এক বাস্তবের সম্ভাবনাকে। সেই সঙ্গে এক অদ্ভুত বাঘবন্দি খেলায় পাঠককেও জড়িয়ে ফেলে। একদিন খাঁচায় পুরে যাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, 'অশুভ শক্তি'র বিনাশের উন্মাদনায় ফাঁসিতে চড়ানো হয়েছিল, এই বই পড়ে মনে হবে সে যেন ফিরে এসে বলছে, খুন আমি করিনি, করেছ তোমরা সবাই। খুনী দেখতে হলে আমার দিকে নয়, আয়নায় তাকাও।