বই- আলো ছায়ার চার অধ্যায়
লেখক- মহুয়া মল্লিক
প্রচ্ছদ চিত্র - হৈমন্তী ভট্টাচার্য
প্রচ্ছদ সজ্জা - দেবহুতি ভট্টাচার্য
অলঙ্করণ- দেবহুতি ভট্টাচার্য
মুখবন্ধ - উৎস ভট্টাচার্য
বইটির বিস্তারিত
“আলো ছায়ার চার অধ্যায়” আসলে চারটি ভিন্নধর্মী উপন্যাসিকার সংকলন। চারটি কাহিনিকে ঘিরে ব্যপ্ত হয়েছে আলো ছায়ার কখনও রহস্যময় আবার কখনও বা মায়াবী খেলা। মায়ানদী, পাখি সব করে রব, তারাদের কথা, নষ্ট ভ্রুণ আর আলোর জন্মলগ্ন –এই চারটি কাহিনির ভিন্নতা এই সংকলনের মূল বৈশিষ্ট্য। ভিন্ন রুচির পাঠকের কথা ভেবেই কাহিনি নির্বাচনের এই ভিন্নতা।
“মায়ানদী” আদ্যন্ত প্রেমের কাহিনি বললে হয়ত ভুল হবে। প্রেম যে কখন ফাঁসির দড়ি হয়ে গলায় চেপে বসে আর তখন অক্সিজেনের জন্য ছটফট করা এই উপন্যাসিকার মূল বিষয়। মায়াবী পায়ে প্রেম আসে কাহিনির নায়কের জীবনেও, কিন্তু সমাজ বহির্ভূত প্রেম নাকি দাম্পত্য কোনটাকে বেছে নেবে কাহিনির নায়ক সেই পথের দিশা দেখিয়েছে “মায়ানদী”।
“পাখি সব করে রব” একটি অন্য স্বাদের উপন্যাসিকা। উনবিংশ শতকের মধ্যভাগে কলকাতায় উদ্ভব ঘটেছিল পক্ষীদলের। এই পক্ষী দল মোটেই পাখপাখালির দল নয়। বাবু কালচারের উপর ব্যাঙ্গ- বিদ্রুপাত্মক সঙ্গীত রচনা করাই ছিল এই পক্ষীদলের কাজ। যার পুরোধায় ছিলেন বিখ্যাত গায়ক রূপচাঁদ পক্ষী। শুধু বিদ্রুপাত্মক সঙ্গীত রচনাই নয় এই পক্ষীদল আগমনী বিজয়গান, টপ্পা গান, বাউলগান ইত্যাদিতেও এই পক্ষীদল পারদর্শী ছিল। বর্তমান সময়ের বুকে দাঁড়িয়ে আমাদের কাহিনির নায়ক জড়িয়ে পড়ে অতীতের এই পক্ষীদলের সঙ্গে। অতীত আর বর্তমানের মেলবন্ধনের এই কাহিনি “পাখি সব করে রব”।
“তারাদের কথা” তাদের গল্প বলবে যারা জন্মসূত্রে যে শরীর পেয়েছে, তাদের অবাধ্য মন সেই শরীরের খাঁচায় আটকে থাকতে চায় না। ফলে তাদের সঙ্গে সমাজের অবধারিত সংঘাত গড়ে ওঠে। এই যুদ্ধে কেউ বা হারিয়ে যায় আবার কেউবা সাহস করে নয়নতারার মত দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে। এক মা হারা কিশোর ধীরে ধীরে তনু থেকে রূপান্তরিত হয় তনুলতায়।
নষ্ট ভ্রুণ আর আলোর জন্মলগ্ন এ এক অদ্ভূত দর্শনের গল্প শোনায়। নষ্ট ভ্রূণকে কেন্দ্র করে অলিতে- গলিতে গজিয়ে ওঠা নার্সিংহোম আর কস্মেটিক্স ইন্ডাস্ট্রির রমরমিয়ে চলা ব্যাবসার যোগসূত্র খুঁজতে গিয়ে এক ছায়াময় জগতের সন্ধান পায় কাহিনির নায়িকা। তারপর তার সঙ্গে শুরু হয় এক নিষ্ঠুর খেলা। বন্ধুর হাত ধরে সে কি পারবে অন্ধকার কুঠুরী থেকে আবার আলোয় ফিরতে? সেই নিয়েই কাহিনি আবর্তিত হয়।