ঔরঙ্গজেব : হিন্দুমন্দির ধ্বংস, ধর্মান্তরীকরণ ও জিজিয়া
সুবীরকুমার পাল
মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তি মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব। আচার্য যদুনাথ সরকারের মতে শুধুমাত্র বাংলা ও ওড়িশায় ধ্বংসলীলায় প্রায় ১০,০০০ হিন্দুমন্দির, দেবস্থান ও দেবমূর্তি ভাঙা হয়। বাবর থেকে শাহ আলমের শাসনকালের প্রতিটি পর্বে এই ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের ইতিহাস পাওয়া যায় বহুভাবে, এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী শাসক ছিলেন আকবর। আকবর যে জিজিয়া আদায় বন্ধ করেন, শতাধিক বছর পর ঔরঙ্গজেব তা পুনরায় চালু করেন। অনেকে মনে করেন রাষ্ট্রশক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে হিন্দুমন্দির ধ্বংস সংক্রান্ত সংবাদগুলি মনগড়া, তথ্য সমর্থিত নয়, তাদের ধারণা যে ভুল এই গবেষণামূলক গ্রন্থের ছত্রে ছত্রে তুলে ধরা হয়েছে। পরিশিষ্টে ঔরঙ্গজেব কর্তৃক মন্দির ধ্বংস সংক্রান্ত ২২টি ফারসি ফরমান যুক্ত করা হয়েছে। এই ফরমানগুলির উল্লেখ আছে মসির-ই-আলমগিরি, শাহি দরবারের সরকারি গেজেটিয়ার আখবরাত প্রভৃতি ঐতিহাসিক নথিতে। ছোটো ছোটো বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ বাদ দিলে, মোগল শক্তিকে সরানোর মতো কোনও রাজশক্তির উদ্ভব তার আমলে হয়নি। দক্ষিণভারতে একটি সীমিত এলাকায় একমাত্র শিবাজি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর এবং তাঁর পুত্র শম্ভুজির মৃত্যুর পর ঔরঙ্গজেব ফাঁকা ময়দান পেয়েছিলেন। যশোবন্ত সিংহের মৃত্যুর পর জিজিয়া কর আদায়ের বিষয়ে ঔরঙ্গজেব আদেশনামা জারি করেন। এ সব তথ্য ঔরঙ্গজেবের দরবারের ইতিহাসে রয়েছে, অনেকে সেগুলি অস্বীকার করতে চান। আবার এক শ্রেণির মানুষ ঔরঙ্গজেব সম্পর্কে না জেনেই বিতর্ক করতে আগ্রহী, ওই দুই শ্রেণির মানুষের জন্য এবং এ বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী পাঠকের জন্য এই বই।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.