চন্দ্রপ্রভা : একলা মেয়ের বারোমাস্যা
শরণ্যা মুখোপাধ্যায়
রূপায়ণে সন্তু কর্মকার
নসিবপুর!
একটা শব্দ যেন হাজার তারাবাজি হয়ে শালডাঙার শীতার্ত আকাশে ছড়িয়ে পড়ল। ও কে এসেছে আনন্দের পিছনে! কখন থেকে পিছু নিয়েছে? আনন্দ কি জানতে পারেনি? আমি প্রাণপণ চিৎকারে বলে উঠতে চাইছিলুম, “আনন্দ, তোমার পিছনে এ তুমি কাকে নিয়ে এসছো? তুমি না নিজেই আমাকে বারণ করেছিলে হাভেলির কাছে যেতে, তাহলে তোমার পিছনে ও কে? লম্বা চেহারা, মাথায় টাক, পরণে ঝোলা আলখাল্লা, চিবুকে অদ্ভুত দাড়ি। ওর চোখদুটো অমন রাতচরা শিয়ালের মতো জ্বলছে কেন? লোকলস্কর ভেদ করে ও তোমার পিছু ছেড়ে এবার যে সামনে এগিয়ে আসছে আনন্দ, আমার পানে এগিয়ে আসছে, তুমি কি দেখতে পাচ্ছ না? এবার যে ও আমাকে ধরে ফেলবে…” কিন্তু আমি কিচ্ছুটি কইতে পারলুম না। আমার গলাখানা কে যেন টিপে ধরেছে। কে যেন বলছে, “দেখ মা, তুলুয়া ডুবছে! ওই দেখ তার পরণে ঘন নীলরঙা বাণারসী। সেই যে তোরে বলেছিলুম? এখান থেকে পশ্চিমে অনেক দূরে, বাবা বিশ্বনাথের বাসস্থল? সেইখানের কারিগররা ওই বাণারসী তৈয়ারী করে দেয়। ও বড়ো মহার্ঘ্য বস্তু। তুলুয়া তার ফুলশয্যার কাপড়খানা পরেছে, দেখ..."
ষোড়শ শতকের বাংলা। একদিকে তুর্কি আক্রমণ অন্যদিকে কুলাচারের আধিক্য। একদিকে বৈষ্ণব সাহিত্যের উদ্ভাস অন্যদিকে শাক্তের প্রতিপত্তি। এ সবের মধ্যেই একজন দেখলেন সমাজে দুরকম মানুষ আছে। এক, পুরোমানুষ যারা কিনা পুরুষমানুষ আর এক মেয়েমানুষ। তাদের কথা, তাদের আলাপ, বলার কেউ নেই কোথাও। তাই তিনি কলম ধরলেন। পুরোমানুষ হতে চাওয়া সেই কলমের জীবন, প্রেম ও বিষাদের আখ্যান।
শরণ্যা মুখোপাধ্যায়-এর কলমে, বাংলার প্রথম (তর্কযোগ্যভাবে) মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর জীবনাশ্রিত উপন্যাস, চন্দ্রপ্রভা, একলা মেয়ের বারোমাস্যা'।।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.