ছোটোদের কথামালা
নরেশচন্দ্র জানা
'ছোটোদের কথামালা' প্রাতঃস্মরণীয় পুণ্যশ্লোক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত কথামালা-র পরিমার্জিত রূপ।
'কথামালা' বিদ্যাসাগরের একটি মনোহর রচনা। কিন্তু সাধু ভাষায় লেখা ও কঠিন শব্দবাহুল্যের জন্যে একালের ছোটোদের রসগ্রহণ করা দুরূহ। তাই সাধু ভাষাকে চলিত ও কঠিন শব্দকে সরল করে নেওয়া হয়েছে। বানান সম্পূর্ণরূপে আধুনিক করা হয়েছে। 'কথা'-র শিরোনাম সহজ করে নেওয়া হয়েছে, যেমন-'ব্যাঘ্র ও পালিত কুকুর'-এর বদলে 'বাঘ ও পোষা কুকুর'। এরকম প্রায় প্রতিটি শিরোনাম বদলে নেওয়া হয়েছে। মূল আখ্যান একটুও বদলানো হয়নি, পুরোমাত্রায় বজায় রয়েছে। নীতিকথা জোড়া হয়নি। কেননা, তা ছোটোদের গল্প পড়ার আনন্দ ব্যাহত করতে পারে। আর সব 'কথা'-তেও নীতি-উপদেশ নেই।
পরিশেষে জানাই যে, কথামালা বিদ্যাসাগরের মৌলিক লেখা নয়। গ্রীস দেশের পণ্ডিত ইশপের লেখা গল্পের তরজমা। বিদ্যাসাগর সব কটি গল্পের অনুবাদ করেননি। মাত্র ৮৫টি গল্পের অনুবাদ করেছেন। বিদ্যাসাগর লিখেছেন, 'শ্রীযুক্ত রেবেরেও টান্স জেম্স, ঈসপরচিত গল্পের ইঙ্গরেজি ভাষায় অনুবাদ করিয়া যে পুস্তক প্রচারিত করিয়াছেন, অনুবাদিত গল্পগুলি সেই পুস্তক হইতে পরিগৃহীত হইয়াছে'। বিদ্যাসাগরের রচনাগুণে কথামালা যে অনুবাদ-গ্রন্থ তা বোঝার উপায় নেই।
সেকালের শিশুরা বিদ্যাসাগরের কথামালা আনন্দের সঙ্গে পাঠ করেছে, একালের শিশুরাও ছোটোদের কথামালা খুশির সাথে পড়বে, এরূপ আশা রাখি।
— নরেশচন্দ্র জানা
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি