গল্পমালা ৭
নরেন্দ্রনাথ মিত্র
ছোটগল্প বাংলা সাহিতের গর্ব। বাংলা ছোটগল্পের গর্ব নরেন্দ্রনাথ মিত্র। আবু সয়ীদ আইয়ুব তার একটি গল্পকে চিহ্নিত করেছিলেন ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বড় গল্পের পর্যায়ে উন্নীত’ রূপে। সমকালীন গল্পকার সন্তোষকুমার ঘোষ তাঁকে স্থান দেন ‘মপাসাঁ, ও হেনরি, শেখভ কি রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ আসনে।’ অম্লান দত্তের সুচিন্তিত অভিমত এই, নরেন্দ্রনাথকে ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন অসম্ভব। তিনি আমাদের বাঁচতে শেখান। বস্তুত, বাংলা ছোটগল্পে নরেন্দ্রনাথ মিত্রের আসনটি দীর্ঘকাল আগেই সুচিন্তিত। লেখক-জীবনের সূচনাকাল থেকেই তিনি স্বমহিম। পুরো চার দশক ধরে প্রায় পাঁচশো গল্প লিখেছেন তিনি। সমকালীন জীবন চিরকালীন হয়ে বিধৃত সেইসব গল্পে। নরেন্দ্রনাথের গল্পগ্রন্থগুলি, দুঃখের বিষয়, বহুকাল যাবৎ দুষ্প্রাপ্য ছিল। অগ্রন্থিত গল্পের সংখ্যাও কম নয়। অথচ নিত্যই তার বিভিন্ন গল্পের খোঁজ করেন অনুরাগী পাঠক, গবেষক কিংবা চিত্রপরিচালক। তাঁদের সেই চাহিদার কথা ভেবেই নরেন্দ্রনাথের নানা মাপের পঞ্চাশটি করে গল্প নিয়ে প্রকাশিত হয়ে চলেছে ‘গল্পমালা’র এক একটি খণ্ড। এর আগে ছ’টি খণ্ড বেরিয়েছে। আগেরগুলির মতোই এই সপ্তম খণ্ডেও ধরা রইল প্রায়-হারিয়ে-যাওয়া অথচ অবিস্মরণীয় পঞ্চাশটি স্বভাবসিদ্ধ গল্প। যেসব গল্পের জন্যই গল্পকাররূপে নরেন্দ্রনাথের খ্যাতি এবং যার মধ্য দিয়েই তাঁর প্রভূত মূল্যায়ন সম্ভবপর। এ-সংকলনের আর একটি প্রাপ্তি প্রচলিত ভূমিকার বিকল্পে নরেন্দ্রনাথেরই একটি রচনা: ‘সাহিত্য প্রসঙ্গ’। প্রথম ছ’টি খণ্ডের মতো এ-খণ্ডের গল্পগুলিও রচনাকালের ক্রম-অনুসারে বিন্যস্ত। গল্পগুলির শেষে রচনাকালের উল্লেখ রয়েছে। আর রয়েছে অন্তর্ভুক্ত গল্পাবলির পত্র-পত্রিকায় প্রথম প্রকাশের নির্দেশিকা। সম্পাদক অভিজিৎ মিত্রের নিবেদন-এর মধ্যেও লিপিবদ্ধ সংকলিত গল্পাবলি সম্পর্কে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য।