গল্পসমগ্র রমানাথ রায় ৫ম খণ্ড
যাহ্। ফটিক মারা গেল। মারা গেল হার্ট ফেল করে। অথচ কী এমন বয়স হয়েছিল! আমার বন্ধু ছিল ফটিক। আমারই বয়সি। আমার বয়স তিরিশ বছর, ওর বয়সও ওই রকমই। বড়জোর দু-এক বছর এদিক-ওদিক হবে। তবে মরে ও বেঁচেছে। বেঁচে থাকার দুর্ভোগ থেকে বেঁচেছে। কারণ যে অফিসে কাজ করত, সে অফিসে কাজের চাপ ছিল খুব। ও আর পারছিল না। তাই কখনও বলত, আর পারছি না। এই অফিসটা ছেড়ে দেব ভাবছি। কখনও বলত, এবার মরে গেলে বাঁচি। এই অফিস আমার কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে। শেষ পর্যন্ত ফটিক মরে গিয়ে নিজে বাঁচল। কিন্তু স্ত্রীকে বিপদে ফেলে গেল।
ওর স্ত্রীর নাম কাকলি। স্বামীর মৃত্যুতে সে একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়ল, রাতদিন চোখের জল ফেলতে লাগল। তার চোখের জল যত না ফটিকের জন্যে, তার চেয়ে বেশি নিজের জন্যে। সে কিছুতেই ভেবে পেল না এবার সে কী করবে, কীভাবে বাঁচবে। বুঝে পেল না তার দিন কীভাবে কাটবে। অন্য মেয়ে হলে এই সময় বাপের বাড়ি গিয়ে উঠত। কিন্তু তার বাবা-মা বেঁচে নেই। ভাইবোন বলতেও কেউ নেই। সে তাই দিনরাত ভাবতে লাগল কী করা যায়। কার কাছে গিয়ে সাহায্য চাওয়া যায়।...