হেমন্তের রেললাইন
রূপায়ণ ভট্টাচার্য
পারঘাট ছাড়িয়ে স্টিমার হুইসল বাজিয়ে দূরে চলে যায়। জীবনও তেমন। কবে যেন যাত্রা শুরু হয়েছিল! নির্দিষ্ট স্টেশন এসে গেলে নেমে চলে যাওয়া। এলোমেলো হাওয়ায় চোখের জলের দাগ মেখে প্ল্যাটফর্ম টিকিট উড়তে উড়তে কোথায় হারিয়ে যায়!
এই কান্নাটুকু লিখে রাখেন এক অক্ষরশিল্পী। জীবনের নানা রংয়ের উদ্ভাস যেন বিউগল বাজাতে থাকে তাঁর লেখায়। দূরপাল্লার মেল ট্রেনের মতো দুরন্ত গতিতে ঢুকে পড়ে আমাদের জীবনের উঠোনে। তাঁর গদ্য অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো জীবনের বিভিন্ন অভিমুখে ছুটে বেড়ায়। কখনও বেড়ানোর গল্প, কখনও গান, কখনও খেলা, কখনও বা আপনার পছন্দের খাবারের খোঁজ!
না, এখানেই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ঘটনার অভিঘাতে এমন এক একটি মর্মস্পর্শী লেখা, যা সমকালকে গভীর প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। পাঠক অস্থির হন, ছটফট করেন, অথচ অস্বীকারের রাস্তায় হাঁটতে পারেন না।
পঞ্চাশটি গদ্য যেন পঞ্চাশটি খোলা তরোয়াল। আবার তার শরীরেই লীন হয়ে আছে এক মায়াবী গদ্যের যাদুকাঠি। এমন মনকেমন করা গদ্য যেন মধ্যযামিনীর চাঁদের আলোর মতো আপার্থিব। হেমন্তর রেললাইনে এমন এক অলৌকিক অপরাহ্ন ছুঁয়ে আছে যে অপরাহ্নের আলো পাঠক দুহাতের মুঠো ভরে তুলে নেবেন। হেমন্তর অনুভূতিমালায় স্নিগ্ধ হয়ে উঠবেন। প্রত্যেকের মনে পড়বে তাঁর স্বজনের কথা, যাঁকে একদিন হাত ধরে কোনও স্টেশন থেকে নিয়ে এসেছিলেন। আবার থাকার মেয়াদ শেষ হলে হাতে করেই তুলে দিয়েছেন জীবনের শেষ স্টেশনে। লেখক তাঁর গদ্যে এভাবেই এক অনিবার্য নশ্বর জীবনের ছবি এঁকেছেন।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি