পর্দাপুরান : বাঙালি নারীর আড়াল ও অন্তরাল
জয়িতা দাস
পর্দা-সংস্কৃতি প্রথম চালু হয়েছিল কনস্ট্যান্টিনোপল বা বাইজেনটাইন রাজপরিবারে। আর্য-ভূখণ্ডে এই সংস্কৃতির প্রচলন সম্পর্কে জনপ্রিয় মতটি হচ্ছে মুসলিম সুলতানদের অনুবর্তী হয়ে এই দেশে এর অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। তবে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে লেখা মহাযান সাহিত্য 'ললিতাবিস্তার সূত্র' অবশ্য অন্য এক সত্য উদ্ঘাটিত করে। কৌটিল্যের 'অর্থশাস্ত্রে' নরপতিদের বিপন্মুক্ত রাখতে রাজীদের অন্তঃপুরে আটকে রাখার নিদান দেওয়া হয়েছে। মৌর্য সাম্রাজ্যে অন্তঃপুর পাহারার দায়িত্ব ছিল এক বিশাল নারী রক্ষীবাহিনীর ওপর। মেগাস্থিনিসের বর্ণনা এর সাক্ষ্য দেয়। পঞ্চদশ শতকে বিজয়নগরের হারেমে অসূর্যস্পশ্যা রাজবধূদের বন্দিজীবন নিশ্চিত করতে খোজা প্রহরীদের মোতায়েন করা হত। মুঘল আমলে রাজপরিবারের বাইরে সম্ভ্রান্ত সমাজে এই প্রথা সম্মানের চিহ্ন হয়ে দাঁড়ায়। বঙ্গদেশে ষোড়শ শতকের শেষ পর্ব থেকে সমাজপতিরা পর্দা নিয়ে কঠোর মনোভাব দেখাতে শুরু করেছিলেন। এই বইটিতে পর্দার সেই ইতিহাস সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। তবে মূলত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ঔপনিবেশিক বঙ্গে পর্দা সংক্রান্ত মেয়েদের আচার-ব্যবহার-বিশ্বাস, অন্তঃপুরের বাইরে জেনানাদের পর্দা ব্যবহারের নিয়মনীতি, পর্দানশিন মেয়েদের বিনোদন এবং পর্দাসংক্রান্ত নানা গল্পকথাকে। সেইসব গল্পের মূল কথক আমাদের পূর্বমাতৃকারা। তাঁদের কথকতাই এই পর্দা পুরাণের মূল অবলম্বন।
Login Or Registerto submit your questions to seller
No none asked to seller yet