কয়লামঙ্গলকাব্য
হিরন্ময় গঙ্গোপাধ্যায়
এই সেই রাঢ়ভূম। মঙ্গলকাব্যের ধারায় বাংলাসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছিল যে ভূমি, সেই ভূমিতেই কয়লাও ফলে। রাঢ়ে মনসা, ধর্ম, চণ্ডীর মতো জাগ্রত, মহা জাগ্রত শক্তির দেবতা কয়লা। আসানসোল-রানিগঞ্জের কয়লাখনি অঞ্চল আজ ধুঁকছে, যেকোনও সময় শেষ হয়ে যেতে পারে । মাফিয়া, রাজনৈতিক নেতা, দালাল, পুলিশ, কয়লা-প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে শূন্য হয়ে যাচ্ছে রাঢ়ের ভূগর্ভ। ইংরেজ কোম্পানি সমূহ, দ্বারকানাথ বেঙ্গল কোল, কোল ইন্ডিয়া সকলেই কয়লা উত্তোলন করে মুনাফা অর্জন করতে চেয়েছেন আর উপহার দিয়ে গেছেন রাঢ়কে ধস আর গ্যাস। টপ সয়েলকে চিরতরে নষ্ট করে চির হরিয়াল রাঢ়কে করেছেন বন্ধ্যা ঊষর ভূখণ্ড। কয়লা এমনভাবে এলাকার মানসিকতায় গেঁথে গেছে, কেউ অন্য সেক্টরে কাজ করতে চাইছে না। ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক জোনে কয়লা কাটতেও তাদের মৃত্যুভয় নেই। গ্যাস, জল, চাল-ধস ধীরে ধীরে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে গেল খনি অঞ্চলের পুলিশ, বিএসএফ, ইসিএল কর্মকর্তা, নেতাদের আনুকূল্যে। তার মধ্যে রয়েছে অবৈধ কয়লা পাচার, কয়লা মাফিয়া। গোটা কয়লা অঞ্চলটি ক্রমশ বসবাস অযোগ্য হয়ে উঠেছে। কয়লা উৎপাদনের প্রথম মুহূর্তটি থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত এক বিস্তারিত উপাখ্যান ‘কয়লামঙ্গল কাব্য’। মঙ্গল কাব্যের জন্ম রাঢ়ে, কয়লার জন্মও রাঢ়ে, ‘কয়লামঙ্গল কাব্য’ সেই রাঢ়েরই উপাখ্যান। রাঢ়ের আধুনিক মঙ্গলকাব্য। উর্জা মাহাত্ম্য। নায়ক/ নায়িকা যদি কেউ থাকে এই উপন্যাসের, তা কয়লা, কয়লা, কয়লা। কয়লাই খল নায়ক। এবং কয়লাই উপাখ্যান।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.