‘মহাভারতের দুর্যোধন’ নামক এই আলচনাধর্মী বইটিকে আংশিক গবেষণাধর্মী-ও বলা যায়, যেখানে চলিত মহাভারতের প্রথা ভেঙে দুর্যোধনকে খানিকটা নায়ক হিসেবেই দেখানাে হয়েছে এবং বহু অভিযােগের তিরের নিশানায় রাখা হয়েছে শ্রীকৃষ্ণকে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের কারণ এবং রণাঙ্গনে প্রতিটা মৃত্যুর পেছনে কৃষ্ণের ষড়যন্ত্র ও তাঁর অভিলাষ স্পষ্ট বােঝা যায় অনেক ঘটনা থেকেই। যেমন ঘটৎকচের মৃত্যুতে অর্জুনের বেদনা অনুভূত হলেও কৃষ্ণের খুশি হওয়ার মতাে অসংখ্য ঘটনার প্রেক্ষিতে আলােকপাত করেছেন লেখক। দুর্যোধন চরিত্রটি আমাদের কাছে যে আঙ্গিকে প্রতিভাত হয়, সেই দৃশ্যপটকে তিনি যুক্তিসম্মতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন মহাভারতের বিভিন্ন অনুষঙ্গ টেনে। অনেক ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে মহাভারতের কিংবদন্তীর অভ্যন্তরীণ কঙ্কাল। এটা আরও স্পষ্ট হয় বারবারিকের কথায়। পুরাে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করে বারবারিক ব্যাসদেবকে বলেছিলেন, এখানে বীর একজনই, যা কিছু দেখা যাচ্ছে সবই মায়া। কুরুক্ষেত্রের হত্যাযজ্ঞে মূলচক্রী হলেন শ্রীকৃষ্ণ। নয়তাে পাণ্ডবদের পক্ষে এই যুদ্ধ-জয় অসম্ভব ছিল।
স্রোতের বিপরীতে গিয়ে দেখলে দুর্যোধনকে কৃষ্ণ ও শকুনির স্বার্থসিদ্ধির ফাঁদে অসহায় পাখির মতাে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে পরিচিত চিন্তার আবহ থেকে বেরিয়ে এভাবে অবশ্য অধিকাংশ মানুষই ভাবেননি কখনও। লেখক ঠিক এই জায়গাতেই ঘা দিয়ে আমাদের ভাবনার এক নতুন সত্ত্বা জাগিয়ে তােলার চেষ্টা করেছেন এবং প্রতিটা যুক্তিতে নিজের মহাকাব্যিক জ্ঞানের নিখুঁত ছাপ রেখেছেন। সহজ সরল ভাষায় লেখা এই বইটি একটি প্রথা-ভাঙা চিন্তার জায়গা তৈরি করবে বলেই আশা করা যায়।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.