মঙ্গল কাব্য বাঙালির পুরান-ইতিহাস
উত্তম পুরকাইত
বাংলার মঙ্গলকাব্য গুলি শুধুই ধর্মবিষয়ক আখ্যান কাব্য নয়। এগুলির সমগ্র অংশ জুড়ে মানব ইতিহাসের বিস্তৃত সাম্রাজ্য আছে। বৈষ্ণব কিংবা শাক্ত পদাবলির ধর্মীয় আবরণটুকু সরিয়ে দিলে সেগুলিকে যেমন শেষ পর্যন্ত মানবহৃদয়ের গান বলে মনে হয় তেমনি মঙ্গলকাব্য গুলির লৌকিক দেব মহিমার বাহ্য আবরণটুকুর আড়ালে মধ্যযুগের বাংলাদেশের কিংবা বাঙালির পুরাবৃত্ত বা পরিপূর্ণ ইতিহাসের রাজ্য আবিষ্কৃত হয়। প্রায় পাঁচশো বছরের বাঙালির আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক ভাবলোকের বিশিষ্ট পরিচয়ের ধারক এই মঙ্গলকাব্য গুলি। অবশ্য শুধু বাঙালি জাতি নয়, বাংলার প্রকৃতিও তার সমস্ত রকম বৈচিত্র্য নিয়েই এসেছে কাব্য গুলিতে। ভৌগোলিক প্রকৃতির বৈচিত্র্য অনুসারে বাংলার নানা প্রকারের বৃক্ষ, গুল্ম, কিংবা তৃণ জাতীয় গাছ-গাছালি, নদী-সরোবর-খাল-বিলে জন্মানো নানা প্রজাতির মাছ, এমনকি নানা শ্রেণির সাপ, রাজ্যোদ্যানে কিংবা পথের ধারে ফুটে থাকা নানা ফুল, লতা-পাতা, বাংলার ক্ষেতভরা শস্য-এমনকি নানা জাতির ধান সব কিছুরই অনুপুঙ্খ বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে বাঙালির এই পুরাণ-ইতিহাসে। তাই কেবলমাত্র সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিই মঙ্গলকাব্য চর্চার একমাত্র পথ নয়।
'মঙ্গলকাব্য বাঙালির পুরাণ-ইতিহাস' বইটির দ্বিতীয় ও পরিমার্জিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গলের পাঠ পর্যালোচনা যুক্ত হওয়ায় আয়োতন আরও একটু বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি