নমঃ শিবায়
সুচেতনা সেন কুমার
এক দীর্ঘদেহী জটাধারী পুরুষ হেঁটে চলেছেন রেখাহীন পথে; তার ত্রিশূলের আগায় তিনি ধারণ করেছেন বিশ্বকে। হাতের ডমরুর নাদ ধীরে ধীরে দিকে দিকে প্রতিধ্বনিত হয়ে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করছে ব্রহ্মাণ্ডে। তারপর সযত্নলালিত সেই সৃষ্টিকেই নিজে হাতে ধ্বংস করতে তিনি মেতে উঠেছেন তাণ্ডবে।
তার বিভিন্ন করণের মাধ্যমে লয় পাচ্ছে সমগ্র বিশ্ব।
এক প্রগাঢ় অন্ধকার! ঠিক তারপরেই আবার আলোর এক বিস্ফোরণ… সৃষ্টি পালন আর ধ্বংসের চক্রের পুনরাবৃত্তি।
সিন্ধুসরস্বতী সভ্যতা থেকে লিঙ্গোপাসনা, আগম, পুরাণ লৌকিকতার পথ ধরে তার বিবর্তনের যে রূপরেখা তাকেই ধরার এক সামান্য প্রয়াস— ‘নমঃ শিবায়’।
------------
শিব। কে তিনি ? তিব্বত থেকে নেমে আসা কোনো মানুষ ? নাকি দেবতা ? নাকি স্বয়ং ব্রহ্ম ?
উপমহাদেশে তাঁর প্রসার কোন সুদূর অতীতের সাক্ষ্য বহন করে? সিন্ধু-সরস্বতী সভ্যতা হয়ে বৈদিক, পৌরাণিক সমাজ থেকে এই আধুনিক সভ্যতায় কীভাবে বিবর্তিত হয়েছেন দেবাদিদেব মহাদেব?
'নমঃ শিবায়' মূলত তাঁর এই বিবর্তন, প্রতীক অর্থাৎ শিবলিঙ্গ নিয়ে তাত্ত্বিক, দার্শনিক আলোচনা করার সঙ্গেই তাঁর নানা অচেনা-অজানা রূপের কথা পাঠককে জানাবে। বেদ, পুরাণ, শৈবাগম ও মহাকাব্যের পাতায় চলবে তাঁর অনুসন্ধান। লিঙ্গরূপে ভারতমৃত্তিকায় প্রোথিত শৈবধর্মের বিভিন্ন তীর্থস্থল, যেমন দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ, পঞ্চভূতস্থল, অষ্টলিঙ্গ, পঞ্চারামক্ষেত্র হয়ে উঠেছে সে যাত্রাপথের অঙ্গ। আর শেষে বাংলার ইতিহাস, লিখিত ও মৌখিক সাহিত্য, সমাজ-সংস্কৃতির প্রতি পরতে লুকিয়ে থাকা শিবচেতনার নিবিড় উপলব্ধিতে হবে তার পরিসমাপ্তি। তিনিই যে বাংলার প্রকৃত গণদেবতা এই উপলব্ধি নিয়েই 'শিবোহম' উচ্চারণে শিবে বিলীন হতে আহ্বান জানায় 'নমঃ শিবায়'।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.