প্রাচীন ভারত সমাজ ও সাহিত্য
সুকুমারী ভট্টাচার্য
একদা যে-ভাষা ছিল সমগ্র ভারতবর্ষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বাহন, নানা কারণে তার সঙ্গে সাধারণভাবে বিচ্ছেদ ঘটে গেছে আমাদের। ভাষা হিসেবে সংস্কৃতের চর্চা বিশেষভাবে উৎসাহী কিছু মানুষের মধ্যে ক্রমশ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। আর এরই ফলে, সংস্কৃত-অনভিজ্ঞ সাধারণ জিজ্ঞাসু পাঠক নিজেদের অতীত ঐতিহ্য থেকে বহুলাংশে বঞ্চিত।
প্রধানত এই জাতীয় পাঠকের মুখ চেয়েই সুকুমারী ভট্টাচার্যের এই গ্রন্থ। প্রাচীন ভারত ও সংস্কৃত সাহিত্য সম্পর্কে যাঁরা কৌতূহলী, অথচ ভাষার ব্যবধান যাঁদের কাছে দুস্তর প্রতিবন্ধক, তাঁদের কৌতূহল বিশেষভাবে মেটাবে এই তথ্যসমৃদ্ধ, চিন্তা-উদ্দীপক, আবার একই সঙ্গে সহজ ভাষায় রচিত, নিবন্ধাবলী।
প্রাচীন সাহিত্য ও সমাজের নানান দিক দিয়ে আলোচনা এ-গ্রন্থভুক্ত নিবন্ধাবলীর অন্তর্লীন ঐক্যসূত্র। সে-আলোচনার পরিধিতে কখনও এসেছে ঋগ্বেদের যুগের মানুষের কথা, কখনও ঋগ্বেদের সৌরসূক্তের কথা। কখনও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যাজ্ঞবল্ক্য ও উপনিষদের যুগের বিচার, কখনও সংস্কৃতে বিয়োগান্ত সাহিত্যের অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধান। কোনও প্রবন্ধে মহাকাব্য-রূপে মহাভারতের উৎকর্ষ প্রতিপাদন, কোনওটিতে মৃচ্ছকটিকের সমাদরের কারণ বিশ্লেষণ। কোথাও বিবৃত হয়েছে শতককাব্যের উদ্ভব-অবসানের ইতিহাস, কোথাও কাব্যে অলংকার-প্রয়োগের সাফল্য ও সীমারেখা বর্ণিত। কালিদাসের অসামান্য চিত্রকল্প ও কিছু উপাখ্যানের পিছনে সক্রিয় আদিকল্প কোনও প্রবন্ধের বিষয়, কোনও প্রবন্ধের আলোচ্য পঞ্চম থেকে একাদশ শতকে সংস্কৃত সাহিত্যে শূদ্র ও নারী।
প্রাচীন ভারতে নারীর স্থান নিয়ে অবশ্য আরও দুটি প্রবন্ধ এই গ্রন্থে। বলা যায়, একটি অন্যটির পরিপূরক ঋগ্বেদের যুগ থেকে খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত কাল-পরিসরে সমাজে গণিকার অবস্থিতি ও দ্বৈধ মূল্যে তার
বিচার নিয়ে সুনীর্ঘ একটি নিবদ্ধের পাশাপাশি রয়েছে 'বৈদিক সাহিত্যে নারী' শীর্ষক একটি আলোচনা।
সন্দেহ নেই, প্রাচীন ভারতকে নানা দিক থেকে জানাবে এই বই।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি