পুরোনো দিনের মেয়েদের লেখা, মেয়েদের নিয়ে লেখা

(0 পর্যালোচনা)
লিখেছেন/সম্পাদনা করেছেন
পরমাশ্রী দাশগুপ্ত

মূল্য
₹300.00
ক্লাব পয়েন্ট: 20
পরিমাণ
মোট দাম
শেয়ার করুন

বই - পুরোনো দিনের মেয়েদের লেখা, মেয়েদের নিয়ে লেখা (প্রবন্ধ সংকলন)

লেখক- পরমাশ্রী দাশগুপ্ত 

'হুতোম প্যাঁচার নক্শা-এ কালীপ্রসন্ন সিংহ উনিশ শতকের প্রথম ভাগে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পরিবর্তিত সমাজচিত্র বিষয়ে লিখেছিলেন-

পাঠক! নবাবী আমল শীতকালের সূর্যের মত অস্ত গ্যালো। মেঘান্তের রৌদ্রের মত ইংরাজদের প্রতাপ বেড়ে উঠলো। বড় বড় বাঁশঝাড় সমূলে উচ্ছন্ন হলো। কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মাতে লাগালো। এবো মুনসি, ছিরি বেলে ও পুঁটে তেলি রাজা হলো। সেপাই পাহারা, আসা মোটা ও রাজা খেতাব, ইণ্ডিয়া রবরের জুতো ও শান্তিপুরের ডুরে   উড়ুনির মত, রাস্তায় পাজাড়ে ও ভাগাড়ে গড়াগড়ি যেতে লাগলো... হাফ আখড়াই, ফুল আখড়াই, পাঁচালি ও যাত্রার দলেরা জন্ম গ্রহণ করে। সহরের যুবক দল গোধুরী, ঝকমারী ও পক্ষীর দলে বিভক্ত হলেন। টাকা বংশগৌরব ছাপিয়ে উঠলেন।১

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিক থেকে বণিক, সম্পন্ন ব্যক্তি, ভুঁইফোড় জমিদার, কর্মপ্রার্থী উমেদারেরা কলকাতা শহরকে জমজমাট করে তুলেছিল। শহর ও শহরতলিতে মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিনোদনেও বেশ কিছুটা বদল এসেছিল। ঔপনিবেশিক শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে পুরোনো জীবনচর্যার দিক ঘুরতে শুরু করে। যদিও শহর কলকাতার বদলমুখী এই আলোড়ন থেকে দূরে গ্রামাঞ্চলে তখনও বয়ে চলেছিল পুরোনো জীবন ধারার স্রোত। মুদ্রণ যন্ত্র এসে যাওয়ার পরও হাতে লেখা পুথির প্রচলন ছিল অনেক বেশি। দু-একটি কাব্য মুদ্রিত হয়ে প্রচারিত হতে আরম্ভ করলেও তুলোট কাগজে সেহাই কালিতে লেখা পুথি নিঃসন্দেহে বেশি জনপ্রিয় ছিল। গ্রামে-গ্রামান্তরে মঙ্গল কাব্যপাঠের আসর, রামায়ণ-মহাভারত-ভাগবত পাঠ তখনও আগের মর্যাদা হারায়নি। বৈষ্ণবদের আখড়ায় কীর্তন, পালাগান অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছিল, বসতো পাঁচালি, কবিগানের আসরও। নতুন করে সৃষ্টি হওয়া পাঁচালি গান, কবিগান, কৃষ্ণযাত্রার পালায় প্রাগাধুনিক বাংলা সাহিত্যধারার রীতি-প্রকৃতিরই অনুবর্তন চলেছিল। উনিশ শতকের তিন-চার দশক পর্যন্ত নতুন সৃষ্ট সাহিত্য ধারার সমান্তরালে পুরোনো সাহিত্য ধারা অব্যাহত ছিল। এইসব সাহিত্য সময়ের দিক থেকে উনিশ শতকীয় হয়েও মেজাজের দিক থেকে প্রাগাধুনিক। নতুন পালাবদলের হাওয়া এদের গায়ে লাগেনি। এমনই এক ধারার কবি সুলক্ষণা। দীনেশচন্দ্র সেন বলেছেন 'সুলা' কথাটা আসলে 'সুলক্ষণা'-র অপভ্রংশ। আবার ক্ষিতীশচন্দ্র মৌলিকের মতে 'সুলা'-র আসল নাম সুলোচনা। গীতিকা-রচয়িতা সুলক্ষণা (যিনি সুলা নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন) পুরোনো কৃষ্ণলীলা, পালাগানের অনুসরণে লিখেছিলেন গোপিনী কীর্তন বা কৃষ্ণকীর্তন পালা এবং পূর্ববঙ্গে বেশ খ্যাতিও পেয়েছিলেন। এই পালা উনিশ শতকে লেখা হলেও এর মধ্যে প্রাগাধুনিক বাংলা সাহিত্যের উপাদান ভরপুর হয়ে আছে। ফলে সাহিত্যের ইতিহাসকার তাকে 'মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের তৃতীয় মহিলা' কবি বলতে দ্বিধাবোধ করেননি। অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে রামী ও চন্দ্রাবতী যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় মহিলা কবি হলে তৃতীয় সুলা বা সুলক্ষণা। দীনেশচন্দ্র সেনকে চন্দ্রকুমার দে মৈমনসিংহ অঞ্চল থেকে সুলার 'গোপিনী কীর্তন' পালাটি সংগ্রহ করে পাঠিয়েছিলেন। মৈমনসিংহের জমিদার বিজয় নারায়ণ আচার্য এই পালাটি সংগ্রহ করেছিলেন। তিনিই সুলা গায়েনের জীবনসম্বন্ধীয় নানা তথ্য চন্দ্রকুমার দে-কে দিয়েছিলেন। দীনেশচন্দ্র সেনের পূর্ববঙ্গ গীতিকার তৃতীয় খণ্ড, দ্বিতীয় সংখ্যা যা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল তার মধ্যে সংকলিত হয়েছিল এই গোপিনী কীর্তন পালা।'

পর্যালোচনা ও রেটিং

0 মোট 5.0 -এ
(0 পর্যালোচনা)
এই বইয়ের জন্য এখনও কোন পর্যালোচনা নেই

সংশ্লিষ্ট বই

বই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা (0)

প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য

অন্যান্য প্রশ্নাবলী

কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি