ঠাকুরবাড়ির বাবু মজলিশ
শান্তা শ্রীমানী
দর্পনারায়ণ ঠাকুরের পুত্র গোপীমোহন ঠাকুরের সময় দুর্গাপুজোয় পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুরবাড়িতে বসত বাইজি নাচের আসর। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতেও গুণেন্দ্রনাথ বসাতেন বাই-নাচের মজলিশ। সে আসরে আসতেন সে-সময়ের বিখ্যাত বাইজিরা- মালকাজান, শ্রীজান, গহরজান প্রমুখ। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির বিবাহ উৎসবে মেয়েমহলে বসত খ্যামটা নাচের আসরও। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমল থেকেই বন্ধ হয়ে গেল এসব আসর। কালের পরিবর্তনে রুচিসংস্কৃতির ছোঁয়া লাগলো ঠাকুরবাড়ির আমোদ-প্রমোদ উৎসবে। এই পরিবর্তনকে শক্তমুঠিতে ধরলেন রবীন্দ্রনাথ।
গোপীমোহন ঠাকুর থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবারের আমোদ-প্রমোদ-বিলাস-উৎসবের ধারাবাহিক ছবি ধরা পড়েছে 'ঠাকুরবাড়ির বাবু মজলিশ'-এ।
---------------
দুর্গাপুজোর সময় নামকরা সব বাইজিদের আনাতেন গোপীমোহন। দুর্গাদালানেই হত দুর্গাপূজা। তার আশেপাশে ছিল বড় বড় ঘর। সেখানে বসত নাচের আসর। আর সে জলসায় নিমন্ত্রিত হয়ে আসতেন সাহেব সুবো থেকে শুরু করে কলকাতার বহু খ্যাতনামা মানুষ। আসতেন চিৎপুরের নবাবও। আসরুন, হিঙ্গন, সুপনজান, নিকি সেসময়কার বিখ্যাত নর্তকীরা জমিয়ে তুলত রঙিন রাতের মেহফিল।
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির বাবু রামলোচন ঠাকুরেরও আখড়াই বা হাফ-আখড়াই গানের ব্যাপারে খুব উৎসাহ ছিল। তিনি কালোয়াতি গানের পাশাপাশি কবিগান ও পাঁচালি গানের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। কবিগানের দল ও কালোয়াতদের ডেকে নিজের বাড়িতে মজলিস বসাতেন। সেখানে আমোদ প্রমোদ হত। আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে এসব উপভোগ করতে বেশ পছন্দ করতেন তিনি।
স্বর্ণকুমারী তাঁর কাশিয়াবাগানের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রকে। বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন চায়ের সমঝদার। জানকীনাথও তাই। স্বর্ণকুমারীর বাড়ির চা বঙ্কিমচন্দ্রের খুব ভাল লাগে। সেকথা তিনি স্বর্ণকুমারীকে জানালে স্বর্ণকুমারী বঙ্কিমচন্দ্রের বাড়িতে চায়ের একটি প্যাকেট ও একগুচ্ছ গোলাপ ফুল উপহার পাঠিয়ে দেন। বঙ্কিমচন্দ্র প্রায়ই আসতেন স্বর্ণকুমারীর চায়ের আসরে। সঙ্গে তাঁর দুই নাতিকেও আনতেন।
প্রবেশ করুন বা রেজিস্টার করুনআপনার প্রশ্ন পাঠানোর জন্য
কেউ এখনো কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি
Boier Haat™ | © All rights reserved 2024.